ঘরে বসে ৫ মিনিটেই পাওয়া যাবে জমির খতিয়ান

জমির রিভিশনাল সার্ভে (আরএস) খতিয়ান নিয়ে দপ্তরে দপ্তরে ঘোরার দিন শেষ। আরএস খতিয়ান একদম হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। আগে যেখানে এই খতিয়ান পেতে সময় লাগত ১৫ থেকে ২০ দিন, তা এখন পাওয়া যাবে মাত্র ৫ মিনিটে। এখন যে কোন স্থান থেকেই অনলাইনে আবেদন করে সংগ্রহ করে নেয়া যাবে জমির খতিয়ান।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের সহায়তা 'হাতের মুঠোয় খতিয়ান' স্লোগান নিয়ে অনলাইনে এই পদ্ধতি চালু করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। land.gov.bd বা rsk.land.gov.bd বা www.minland.gov.bd এই ঠিকানাগুলো থেকে কিংবা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে সংগ্রহ করা যাবে খতিয়ানের কপি।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশে প্রায় ৬১ হাজার ৫০০ মৌজা রয়েছে। তার মধ্যে ৪১ হাজার মৌজার জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় ১৯৬৫ সাল থেকে চলমান জরিপে প্রস্তুত করা প্রায় ৩২ হাজার মৌজার এক কোটি ৪৬ লাখ আরএস খতিয়ানের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাবে। ক্রমান্বয়ে যুক্ত হতে থাকবে বাকি খতিয়ানগুলো। জরিপ কার্যক্রম শেষ হলে চুড়ান্তভাবে গেজেট প্রকাশ করা হবে।

প্রচলিত পদ্ধতিতে খতিয়ানের কপি পেতে কিছুটা ঝামেলা পোহাতে হয়। জটিল প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘ সময় লাগার কারণে ভূমি অফিসে এবং জেলা প্রসাশকের কার্যালয়ে বারবার যাওয়া-আসা করতে হয়। নতুন এই ব্যবস্থায় আর কোন অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। ঘরে বসেই নেয়া যাবে খতিয়ান।

এছাড়াও এই পদ্ধতিতে আবেদন করা যাবে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপির জন্য। এই অনলাইন ব্যবস্থায় রয়েছে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনিটরিং ও আবেদন নিষ্পত্তি বিষয়ে ট্র্যাকিং করার সুবিধা।

আরএস খতিয়ান অনলাইন সেবা সম্পর্কে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে জনগণকে সেবা দিতে ৩০২টি উপজেলায় ই-মিউটেশন কার্যক্রম চালু রয়েছে। রিভিশনাল সার্ভে খতিয়ান (আরএস ) সিস্টেম ও ডিজিটাইজেশন অব রেকর্ড রুম (ডিডিআর) এর মাধ্যমে সিএস, এসএ ও আরএস খতিয়ান অনলাইনে সরবরাহের পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রচলিত নিয়মে জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের রেকর্ডরুম থেকে খতিয়ান বা পর্চা দেয়া হয়। দুঃখজনক  হলেও সত্য যে খতিয়ানের কপি পেতে রয়েছে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা। সাথে রয়েছে খরচ ও যাতায়াত ভোগান্তি এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম। এই সকল সমস্যা নিরসন ও ভূমি সংক্রান্ত সেবাকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করতে অলনাইন ভিত্তিক সেবা চালু করা হয়েছে।

খতিয়ান পেতে অনলাইনে আবেদন করার সময় আবেদকারীর নাম, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ও ফোন নাম্বার ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে। নির্ধারিত তথ্য দেয়ার পর অনলাইন ব্যাংকিং অথবা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। ফি পরিশোধ করার পর খতিয়ানের অনলাইন কপি সংগ্রহ করা যাবে। সার্টিফাইড কপি নেয়ার ক্ষেত্রে ফি দেয়ার পর সার্টিফাইড কপির জন্য নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, ট্রানজেকশন আইডি ও ডাকযোগে যোগাযোগের ঠিকানা দিয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ডাকযোগে আরএস খতিয়ানের কপি পাঠিয়ে দেয়া হবে আবেদনকারীর ঠিকানায়।