টার্গেটে ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিকরা

এগিয়ে আসছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। আসন্ন এই বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল করদাতার সংখ্যা ৪০ লাখ থেকে ১ কোটিতে বাড়ানোর নির্দেশনা দিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বাজেট তৈরির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা। এই কর আদায় পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছেন সকল ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিকরা।

কর্মকর্তারা জানান, নতুন করদাতা তৈরি করতে ব্যাপক পরিকল্পনা থাকছে আসন্ন বাজেটে। পরিকল্পনা অনুসারে ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিকসহ নতুন করদাতা খুঁজতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে। শুধু রাজধানীতেই অভিযান চালিয়ে ৪০ লাখ নতুন করদাতা তৈরি করতে চায় সরকার।

এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নতুন সরকারের প্রথম অর্থবছরেই করদাতার সংখ্যা ২০-২২ লাখ থেকে ১ কোটি করতে চাওয়া অনেক কঠিন কাজ। কিন্তু তাই বলে করদাতা বাড়াতে সবাইকে চাপ দেওয়া হবে না। শুধু যারা কর প্রদান করতে সক্ষম তাদেরকেই এই করের আওতায় আনা হবে। এই দেশে অন্তত ৪ কোটি মানুষ আছে, যারা কর দেওয়ার জন্য উপযুক্ত। এদের করের আওতায় আনতে পারলে দেশের দেশের ট্যাক্স ও জিডিপির অনুপাত ব্যাপক হারে বাড়বে।

অর্থ মন্ত্রণালয়সূত্র জানায়, দেশের ৪ কোটি মধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে টিআইএন রয়েছে মাত্র ৪০ লাখ মানুষের। এর মধ্যে আবার রিটার্ন দেয় মাত্র ২০ লাখ মানুষ। এই হিসাব অনুযায়ী দেশের ৯৫ শতাংশ লোক এখনো কর প্রদান করে না। তাই আগামী অর্থবছরের মধ্যেই এক কোটি মানুষকে করের আওতায় আনতে আয়কর মেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অফিস স্থাপন করা হবে। এছাড়া করদাতা খুঁজতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদেরও অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

সূত্র আরও জানায়, আয়কর সংগ্রহ বাড়াতে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এর মধ্যে রাজধানীর ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিকদের ওপর জরিপ চালিয়ে খুঁজে বের করা হবে প্রায় ৪০ লাখ করদাতা। এছাড়া একই ধরনের জরিপ চালিয়ে সম্ভাব্য ৬০ লাখ করদাতা খুঁজে বের করা হবে দেশের সকল জেলা ও উপজেলা শহরগুলো থেকে। এর বাহিরে কর প্রদানে সক্ষম এমন জেলা ও উপজেলা পার্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও করের আওতায় আনা হবে।

অন্যদিকে সারাদেশে নতুন করদাতা খুঁজে বের করতে বিদ্যমান জনবলের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে। তারা বিভিন্ন বাড়ি ও ফ্ল্যাটে গিয়ে অনেকটা খানা জরিপের মতো পরিবারের সকল সদস্যের আয়ের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবেন। এরপর জরিপের তথ্য আয়কর অফিসে জমা দিলে, তা বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য করদাতার সন্ধান ও তাদের কর প্রদানের আওতায় আনবে এনবিআর।