‘এত টাকা কোথায় গেলো, কারাই বা নিলো’

এ যেন ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’। নানা কারণে নাজুক ব্যাংক খাত এবার খেলাপি ঋণে কুপোকাত। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, যা অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন বলছে, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এ বছরের প্রথম তিন মাসে ১৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়েছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

জানা গেছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০১১ সালে ২২ হাজার ৬৪৪ কোটি, ২০১২ সালে ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি, ২০১৩ সালে ৪০ হাজার ৫৮৩ কোটি, ২০১৪ সালে ৫০ হাজার ১৫৫ কোটি, ২০১৫ সালে ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি, ২০১৬ সালে ৬২ হাজার ১৭২ কোটি, ২০১৭ সালে ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি এবং ২০১৮ সালে ৯৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা ছিল। আর ২০১৯ সালের প্রথম তিন মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকায়।

খেলাপি ঋণের ওপর তৈরি বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্চ’১৯ প্রান্তিক প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এত টাকা কোথায় গেলো, কারা নিলো আর কিভাবেই বা দেয়া হলো?

বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় ব্যাংক খাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বেড়েছে। বিশেষ করে গেল বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের পর খেলাপি ঋণ লাগামহীন হয়ে পড়েছে। যদিও শেখ হাসিনা সরকারের নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দায়িত্ব নেয়ার পর খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।