সুলতান মনসুর: আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই

বর্তমান সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেছেন, আজ সরকার দলের দিকেই তার থাকার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে সাধারণ কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছি।

তবে তিনি আওয়ামী লীগ ছাড়েননি, আওয়ামী লীগও তাকে বহিষ্কার করেনি বলে দাবী করেন এই সাবেক ডাকসু ভিপি।

রোববার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর হওয়া আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান মনসুর। তিনি একাদশ সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে উদীয়মান সূর্য প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন এবং জয় লাভ করেন।

সুলতান মনসুর আহমদ বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে গত ৭ মার্চ তিনি শপথ গ্রহণ করেন। এই সংসদ নিয়ে সন্দেহ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল দেশ-বিদেশের অনেকেই। বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল নির্বাচন নিয়েও। কিন্তু ওইদিন যদি তিনি শপথ না নিতেন, তাহলে বিএনপির যে কয়জন নেতা রয়েছেন তারা কেউ শপথ গ্রহণ করতো না বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারি হিসেবেই তিনি শপথ গ্রহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ৫২ বছর ধরে রাজনীতি করেছেন তিনি। দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করার জন্যই শপথ নেন তিনি।

তিনি বলেন, আজকের সংসদনেত্রী শেখ হাসিনা এক সময় তাকে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ডাকসুর ভিপি বানিয়েছিলেন। নেত্রীর আদেশে পাগলের বেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, রূপসা থেকে পাথুরিয়া। দেশের এমন কোন জেলা নেই যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি প্রচার করেননি। পাগলের বেশে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করেছেন ৭০টির বেশি উপজেলায়।

বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত এই বাজেটের মধ্য দিয়ে অবশ্যই দেশের উন্নয়ন হবে। সংসদনেত্রী বারবার বলেছেন, যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ঘুষ নেবে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি ব্যবস্থা নিবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নীতিকে বাস্তবায়ন করতে সবার শপথ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ডাকসুর সাবেক ভিপি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তার মতে একটি কুচক্রী মহল প্রধানমন্ত্রীকে পয়েন্ট অব নো রিটার্নের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই কুচক্রীদের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য, প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষার জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সোনার বাংলা গড়াতে দলকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। আজকের আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার দিনে এটি না করতে পারলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন কোনভাবেই পূরণ করা যাবে না।

মনসুর বলেন, যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট গাছের আগেরটাও খেয়েছেন, পরেরটাও খেয়েছেন, তাদের অনেকে এখন সংসদেও আছেন। স্বৈরাচারী বিরোধী আন্দোলনে সমর্থনকারীরাও সংসদে আছেন। যারা এক এগারোতে সুবিধা নিয়েছেন, তারাও আছেন। কিন্তু এদের সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। তাই যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, বঙ্গবন্ধুর অনুসারী তাদের নিয়েই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে।