কাশ্মির সমস্যার জন্য দায়ী নেহেরু- অমিতের বক্তব্যে লোকসভায় হট্টগোল

দেশভাগ এবং কাশ্মির সমস্যার জন্য জওহরলাল নেহেরুকে দায়ী করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ শুক্রবার তার ওই মন্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লোকসভা। এর তীব্র বিরোধিতা করেন কংগ্রেস সংসদ সদস্যরা।

তার মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেসের জন্যই কাশ্মিরের এক তৃতীয়াংশ মানুষ আমাদের সঙ্গে নেই।’

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মিরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিল শুক্রবার লোকসভায় পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বিল নিয়ে বিতর্ক হয় লোকসভায়।

অমিত শাহ এদিন বলেন, ‘দেশভাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মণীশ তিওয়ারি। আমি তাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই। দেশভাগের জন্য কে দায়ী?’

ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে নিশানা করে অমিত বলেন, পাক সেনাকে যখন কোণঠাসা করে ফেলেছে ভারত, তখনই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। দেশভাগের জন্য কার্যত নেহেরুকেই কাঠগড়ায় তোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আনন্দবাজার বলছে, এতে কংগ্রেস সংসদ সদস্যরা আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠেন। কয়েকজন ওয়েলে নেমে এসেও হইচই শুরু করেন। জওহরলাল নেহেরুর নাম নেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন কংগ্রেসের তারা।

সেই হট্টগোলের মধ্যেই অমিত শাহ আবার খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘ঠিক আছে। নাম নিলে যদি আপনাদের এত ব্যথা লাগে, তা হলে তাকে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করছি।’

বিরোধীরা অভিযোগ তোলেন, বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থে ৩৫৬ ধারাকে ব্যবহার করছে।

কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘মেহবুবা মুফতির পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) এবং বিজেপির জোট কাশ্মিরে সরকার গঠন করেছিল। কিন্তু এই জোট ছিল ভিন্ন ভাবধারা ও আদর্শের দুটি দলের মধ্যে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তা টেকেনি। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে। এখন পরিস্থিতি এমন যে, প্রতি ছয় মাস অন্তর কাশ্মিরে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বাড়াতে হচ্ছে। এর শিকড় লুকিয়ে আছে ২০১৫ সালের ওই অসম জোটের মধ্যেই।’

জবাবে অমিত শাহ তীব্র আক্রমণ করতে শুরু করেন কংগ্রেসকে। তার দাবি, বিজেপি বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া এই ধারা প্রয়োগ করেনি। কিন্তু কোনো রাজ্যের নির্বাচিত সরকার ভেঙে দিতে কংগ্রেসই ৩৫৬ ধারাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে বার বার।

পরিসংখ্যান তুলে ধরে অমিত শাহ বলেন, ‘আজকের আগে দেশে ১৩২ বার ৩৫৬ ধারা বা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে। এর মধ্যে ৯৩ বারই ব্যবহার করেছে কংগ্রেস। আর এখন আমাদের শেখাতে এসেছে কীভাবে এই ধারা ব্যবহার করা উচিত?’

এই বিল পেশের সময়ই অমিত শাহ জানান, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাশ্মিরে বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে।