রিফাতের বাবা: আমি এতিম হয়ে গেছি

গত বুধবার প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে নিমর্মভাবে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর স্বাভাবিকভাবেই ভেঙ্গে পড়েছেন তার বাবা-মাসহ স্বজনরা। শনিবার রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, 'বাবা মারা গেলে ছেলে এতিম হয়, আমি একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এতিম হয়ে গেছি।’ বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে রিফাত শরীফ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে এমন কথা বলেন তিনি।

রিফাত শরীফ হত্যার বিচারের দাবিতে বরগুনায় মানববন্ধন।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে ‘বরগুনার সর্বস্তরের জনগণ’ এর ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বরগুনা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে কয়েকশ বিচার প্রত্যাশী মানুষ অংশ নেয়।

মানববন্ধনে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, 'আমার একমাত্র ছেলেকে কীভাবে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে তা পুরো বিশ্ববাসী দেখেছে। ঘটনার দিন আমার ছেলে তার মায়ের কাছ থেকে পাঁচশো টাকা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বের হয়। পরে লাশ হয়ে বাড়িতে ফেরে। কিন্তু আমার ছেলের হত্যাকারীদের পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।' তিনি ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

মানববন্ধনে রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ ছাড়াও বক্তব্য দেন নিহত জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রইসুল আলম রিপন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দীন সাবু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জুবায়ের আদনান অনিকসহ স্থানীয় শীর্ষস্থানীয় নেতারা।

সমাবেশে জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, 'রিফাতের হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীসহ অন্যরা বরগুনায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কারা এসব সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিচ্ছি তাদেরকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের অনুরোধ করছি।' তিনিও রিফাতের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক বলেন, 'খুনি নয়ন বন্ড দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে গতবছর সংবাদ সম্মেলন করেছিল বরগুনা জেলা ছাত্রলীগ। কিন্তু সে সময় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। এখনো সে সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে। যার শিকার রিফাত শরীফ। আমি নয়নসহ জড়িত সকল সন্ত্রাসীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।'