ভারতীয় চন্দ্রযানকে ঘিরে কুইন্সল্যান্ডে ‘ভুল’ উত্তেজনা

অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব প্রদেশ কুইন্সল্যান্ডের আকাশে সোমবার ভর সন্ধ্যায় হঠাৎই দেখা দেয় একটি ছুটন্ত রহস্যময় আলো। যা কয়েক মিনিট পরেই আবার মিলিয়ে যায়। তারপরই স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে শুরু হয় গুঞ্জন। বুঝি কোন ভিনগ্রহের যান অথবা ইউএফও হানা দিল তাদের দেশে। কিন্তু শেষে জানা গেল সেই উজ্জ্বল রহস্যময় আলো আর কিছু নয়। সেটি আসলে ভারতের চন্দ্রযান-২।

জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটা নাগাদ অস্ট্রেলিয়ার ওই প্রদেশের বাসিন্দারা আকাশে উজ্জ্বল সাদা রং ও ধূমকেতুর মতো লম্বা লেজওয়ালা একটি রহস্যময় আলো দেখতে পান। যা খুব দ্রুত পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এগোচ্ছিল। দুই-তিন মিনিটের মধ্যে আকাশে মিলিয়ে যাওয়া ওই আলোকে সাথে সাথেই ক্যামেরাবন্দি করে ফেলেন হাজারো কুইন্সল্যান্ডবাসী।

এরপরই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন ওঠে- এটা কী ভিনগ্রহের কোন যান, নাকি ইউএফও? সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় রহস্যময় আলোর ছবিটিও। তারপরই হইচই এবং রহস্যময় আলোর খবর ছড়িয়ে পড়ে সব জায়গায়। এমনকি অনেকে ফোন করে দেশটির বিভিন্ন টিভি চ্যানেলকেও বিষয়টি জানান।

মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওসহ চ্যানেলগুলোও রহস্যময় আলোর ব্রেকিং নিউজ প্রচার করে দেশজুড়ে। উত্তেজনা দেখা দেয় ইউএফও'র সম্ভাবনা নিয়ে। কিন্তু সে রহস্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।

রাত ৮টা ৫১ মিনিটে ভিনগ্রহ নিয়ে উৎসাহী বাসিন্দাদের উত্তেজনায় জল ঢেলে দেন ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন কুইন্সল্যান্ডের অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের অধ্যাপক জন্টি হরনার। তিনি জানান, এই আলো আসলে ভারতীয় চন্দ্রযান-২ এর। যা ওইদিন ভারতীয় সময় দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে দেশটির অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতের সময়ের ব্যবধান সাড়ে চার ঘণ্টা। সময়ের ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে থাকায় চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের সময় সেখানে সাতটা ১৩ মিনিট হওয়ার কথা। আর কুইন্সল্যান্ডের আকাশে ওই আলো দেখা গেছে সোয়া সাতটা নাগাদ। তাই ওই আলোকে ভিনগ্রহের যান ভাবলে কুইন্সল্যান্ডবাসীকে হতাশই হতে হবে।

ওই অধ্যাপক আরও বলেন, চাঁদে পাঠানো ভারতীয় চন্দ্রযান-২ এর সেই বিরল দৃশ্য সুদূর কুইন্সল্যান্ড থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে তাদের খুশি হওয়া উচিত। কারণ এমন বিরল মুহূর্তের সাক্ষী সবাই হতে পারে না।