নামকরা হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেট তমার অন্যরকম অভিজ্ঞতা!

গাজীপুরের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া ইয়াসমিন তমা। রাজধানীর ধানমন্ডিতে পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন তিনি। এক গাইনি ডাক্তারকে দেখিয়েছেনও তিনি। কিন্তু সেখানে তার যে অভিজ্ঞতা তা শেয়ার না করে পারেননি। তাই তো সেদিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যম চাইলে নিউজ করতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া ইয়াসমিন তমা শনিবার রাতে (১৪ সেপ্টেম্বর) তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন-

‘আমি সাধারণত নিজের কর্মস্থলের বাইরে ডাক্তার দেখালে পরিচয় দিয়ে যাই না, কথা প্রসঙ্গে পরিচয় বের হলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু আজ জনমের মতো শিক্ষা হলো, জীবনে আর কোথাও যাই করি, এদেশে ডাক্তার দেখাতে গেলে নিজের পরিচয় না দিলে কোনো কোনো ডাক্তারের কাছে মান-ইজ্জত তো থাকবেই না, বরং কুকুর-বিড়ালের মতো আচরণ পেতে হতে পারে। যদিও সব ডাক্তার এক রকম নয়।’

তিনি লেখেন, ‘আজ ধানমন্ডি পপুলার হাসপাতালে গাইনি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডক্টর কোহিনূর বেগমের (প্রাক্তন অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ) কাছে পরামর্শের জন্য গিয়েছিলাম। প্রথমে একজন সহকারী রোগের কথা শুনে সামারি লিখে নিলেন, খুব ভালো। কিন্তু ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকে দেখি, তিনি অন্য রোগী দেখছেন। ডাক্তার এতই ব্যস্ত যে, একজন আয়া এসে আমার কাছে আমার রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলেন। আয়াটার কাজ হচ্ছে, রোগের ‘র’ টা শুনবে, আর অমনি রোগীকে শুইয়ে দিয়ে রোগীর কাপড় খুলে নিবে। আমি বললাম, আমার কি করতে হবে না হবে, তা ডাক্তার এসে বলুক, আপনি এমন করছেন কেন? আয়া মহাশয়ার জবাবের টোন শুনে মনে হচ্ছে, তিনি কোন লাট বাহাদুর হবেন। অতঃপর ডাক্তার এসে জানালেন, তার এত সময় নেই আমাকে চেক করার, এসে বসে কথা বলতে বললেন। তিনি যখন কথা বলা শুরু করলেন, তখন মনে হলো- তার জিহ্বার সাথে একটা চাকু লাগানো আছে। রোগের কথা যা-ই বলি, তিনি তেলে বেগুনে তেতে উঠছেন।’

তমা আরও লেখেন, ‘ফ্রি তো দেখাতে যাইনি, সার্ভিস দিতে এত রাগ হয়, টাকাটা নিতে লজ্জা করে না? আমরা জাতি হিসেবে কবে মানুষ হব? সততা অনেক বিশাল ব্যপ্ত একটি বিষয়; শুধু ঘুষ না খাওয়া মানেই যে সততা নয়। যে কাজের জন্য টাকা নিচ্ছি, সেটা ঠিকমতো না করলে যে ওই টাকা হালাল হয় না, টেবিলের ওপাশে সেবা নিতে আসা মানুষটার সাথে দুরাচরণ করাটা কত বড় পাপ, তা আমরা কবে বুঝতে শিখবো?’

এ ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবাইয়া ইয়াসমিন তমা জানান, ধানমন্ডি পপুলার এর ডক্টর কোহিনূর বেগম, গাইনোকোলোজিস্ট। তার চেম্বারে আয়া এসে রোগ জিজ্ঞেস করে, ডাক্তারের সময় বাঁচানোর জন্য, কী রোগ সেটা ডাক্তার শোনার আগেই আয়া এসে রোগীর কাপড় খুলে নেয়। এটা কেমন কথা? রোগীকে কাপড় খুলতে হবে কিনা, সেটা তো ডাক্তার বলবে তাই না? আর ডাক্তারের আচরণে মনে হচ্ছে তিনি ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাই তার সময় নেই, মেজাজ খারাপ। অথচ, এক হাজার টাকা ফি-টা যখন নিলেন তিনি, তখন লজ্জা করলো না! রোগী হিসেবে তিনি তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।