কাশ্মির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাচ্ছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দল

কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পর থেকে সেখানে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। জম্মু-কাশ্মিরে চলতে থাকা সহিংসতা আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসে বার বার। কাশ্মিরের পরিস্থিতি এখন কেমন, তা খতিয়ে দেখার জন্য মঙ্গলবার সেখানে যাচ্ছেন ইউরোপীয় সংসদীয় দলের প্রতিনিধিরা। 

অবরুদ্ধ কাশ্মির

৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর থেকেই সেখানে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। কিছুদিন আগে ল্যান্ডফোন ও পোস্টপেইড যোগাযোগ সচল করা হলেও, এখনও বেশ কিছু এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা আছে।

কাশ্মির পর্যবেক্ষণের জন্য ২৮ সদস্যের ইউরোপীয় সংসদীয় প্রতিনিধি দলটি ইতিমধ্যেই ভারতে পৌঁছেছেন। সোমবার তারা একাধিক কর্মসূচি পালন করেন। মঙ্গলবার তারা কাশ্মিরে যাবেন। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এক টুইটে প্রতিনিধি দলটির কাশ্মীর পরিদর্শনে যাওয়ার কথা জানান। কাশ্মিরের ইতিহাস, ৩৭০ অনুচ্ছেদ ও বর্তমান ইস্যু নিয়ে ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ডোভাল।

কিছু দিন আগেই এক সভায় পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মিরে ‘দমন-পীড়ন’ চলছে বলে অভিযোগ তোলেন। তার এমন মন্তব্য সরাসরি নাকচ করে দিয়ে কাশ্মিরের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক বলে জানায় কেন্দ্রীয় সরকার।

অন্যদিকে, জম্মু-কাশ্মিরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা মুফতি অভিযোগ তুলেছেন, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোকে ‘সত্য কথা’ না লেখার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। বন্দি মায়ের টুইটার সামলান ইলতিজা। এক টুইটবার্তায় তিনি লেখেন, আশা করা যায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দলটি সাধারণ মানুষ, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম, চিকিৎসক এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন। এই এলাকাটি যে এক আস্তরণে ঢাকা তা উন্মোচন করে জম্মু-কাশ্মিরকে অস্থির পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে কৈফিয়ত দিতে হবেও উল্লেখ করেন তিনি।

'এই সফরে সরকারপক্ষের হার দেখছেন' জানিয়ে আরেক টুইট বার্তায় ইলতিজা লেখেন, দুই রকমের ফলাফল আসতে পারে। এক, প্রতিনিধিদল বলবে পরিবেশ শান্ত, তাতে আটক সকল নেতাদের মুক্তি দিতে হবে এবং ইন্টারনেট চালু করতে হবে; দুই, তারা বলবেন পরিবেশ অশান্ত এবং ভারত সরকার এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে। সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে কেন তারা দেখা করতে পারবেন না, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। 

ইউরোপিয় ইউনিয়নের একটি অংশ ইউরোপিয় পার্লামেন্টের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৭৫১। নির্বাচিত সকলেই ইউরোপিয়। মানবাধিকার রক্ষা, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন-সহ নানা বিষয়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।