বন্দি কাশ্মিরি নেতাদেরকে পুলিশের মারধর!

কাশ্মিরে বন্দি রাজনৈতিক নেতাদের মারধর করেছে পুলিশ। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও প্রাক্তন মন্ত্রী সাজ্জাদ লোনের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল রোববার এমন অভিযোগ করা হয়।

সাজ্জাদ লোন, শাহ ফয়সাল ও ওয়াহিদ প্যারা

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, তীব্র ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে অস্থায়ী বন্দিশালা থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে রাজনৈতিক বন্দিদের। গত রোববার ডাল লেকের তীরবর্তী সেন্টার হোটেলে বন্দি থাকা ৩৪ কাশ্মিরি নেতাকে স্থানান্তর করা হয় শ্রীনগরের এমএলএ হোস্টেলে। সেখানেই সাজ্জাদ লোন, ওয়াহিদ প্যারা ও শাহ ফয়সালকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

বছরের এই সময়টায় প্রচণ্ড শীত পড়ে ডাল লেকের তীরে। সরকারি সূত্র জানায়, বন্দি নেতা ও তাদের প্রহরায় নিযুক্ত রক্ষীরা ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। সেজন্যে কিছুদিন ধরেই বন্দি নেতাদের সেখান থেকে সরানোর কথা ভাবছিল প্রশাসন। টানা কয়েকদিনের তীব্র তুষারপাতে পরিস্থিতি আরো কঠিন হয়ে গেছে।

কদিন আগে বন্দি স্থানান্তর শুরু হয় মেহবুবা মুফতিকে দিয়ে। কিছুদিন আগে তাকে শ্রীনগরের চশমে শাহি থেকে মাওলানা আজাদ রোডের একটি সরকারি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

মেহবুবা মুফতি বন্দি হবার পর থেকে তার টুইটার চালাচ্ছেন মেয়ে ইলতিজা। ধারাবাহিক টুইটে তিনি মায়ের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। যে কটেজে মেহবুবাকে রাখা হয়েছিল তার জানালা ভাঙা ছিল। প্রয়োজনীয় হিটারও ছিলো না।

গতকাল রোববার এক টুইটে ইলতিজা দাবি করেন, এমএলএ হোস্টেলে স্থানান্তরের সময় সাজ্জাদ লোন, ওয়াহিদ প্যারা ও শাহ ফয়সালকে মারধর করা হয়েছে।

একসময়ে কদর করা নেতাদের প্রতি কেন এমন অবিচার কেন প্রশ্ন তোলেন ইলতিজা লেখেন, নরেন্দ্র মোদি এক সময় পিপলস কনফারেন্স নেতা সাজ্জাদকে ভাই বলতেন। কাশ্মিরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ওয়াহিদের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আর ইউপিএসসি পরীক্ষায় সেরা স্থানধারী শাহ ফয়সালকে বলা হতো কাশ্মিরের রোল মডেল।

এদিকে সাজ্জাদের দল জম্মু-কাশ্মির পিপলস কনফারেন্সও দাবি করেছে, দেহ তল্লাশির নামে সাজ্জাদকে মারধর করেছে পুলিশ। তবে এমন সব দাবি নাকচ করে দিয়েছে জম্মু-কাশ্মির পুলিশ।

চলতি বছরের আগস্টের শুরুতে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে জম্মু-কাশ্মিরের  বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় ভারতের বিজেপি সরকার। তার আগেই বন্দি করা হয় সেখানের সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, ফারুক আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি-সহ প্রথম সারির প্রায় সব কাশ্মিরি নেতা-নেত্রীকে। এর মধ্যে ফারুক আবদুল্লাহকে শ্রীনগরে নিজ বাড়িতেই রাখা হয়। বাকি নেতাদের বিভিন্ন সরকারি হোটেল, গেস্টহাউজ ও প্রটোকল ভবনে রেখে সেগুলোকে সাব-জেলের মর্যাদা দেয় প্রশাসন।