আমাদের পেটের কিছু টিস্যু আছে যেগুলো আশপাশের অন্য টিস্যু থেকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল থাকে৷ যখন পেটের ভেতরের চাপ বেশি হয়, যেমন-অনেক দিনের পুরানো হাঁচি, কাশি বা কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে শক্তিশালী টিস্যুগুলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল টিস্যু ভেদ করে বেরিয়ে আসে তখন সেই অবস্থাকে হার্নিয়া বলা হয়। এটি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষ হয়, এমনকি বাচ্চাদেরও হয়। তবে স্থূলকার ব্যক্তিদের এ রোগে আক্রান্ত হতে বেশি দেখা যায়।

hernia diseases

হার্নিয়া হলে শরীরে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, সেগুলোকে হার্নিয়া সিমটাম বলে। নাভির চারদিক, কুঁচকি, উরুর সংযোগস্থল, পুরুষের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ, মহিলাদের ক্ষেত্রে উরুর ভেতরের দিকে ফুলে গেলে হার্নিয়া হয়েছে বলে সনাক্ত করা যায়। এর প্রভাবে কুচকি এবং অণ্ডথলি অস্বাভাবিক ফুলে যায় এবং ব্যথা অনুভূত হয়৷ ইতিপূর্বে সার্জারি হয়েছে এমন অংশেও হার্নিয়া দেখা দিতে পারে। জন্মগতভাবেও হার্নিয়া থাকতে পারে। হার্নিয়ার বহিঃপ্রকাশ সাধারণত ধীরগতিতে হয়, এটি কয়েক মাস এমনকি বছর ধরে হয়ে থাকে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই হার্নিয়া হতে পারে।

হার্নিয়ায় আক্রান্তের লক্ষণ:

  • পেটের নির্দিষ্ট অংশ ফুলে যাওয়া এবং সেই ফোলা থেকে প্রচণ্ড পেট ব্যথা অনুভূত হওয়া।
  • শরীর নিচু করলে ব্যথা অনুভব করা।
  • খাওয়া-দাওয়া না করার পরও পেট ভরা ভরা লাগা।
  • বমি বমি ভাব হওয়া।
  • নাভির আশপাশ ফুলে যাওয়া।
  • কুঁচকি বা অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া
  • উরুর গোড়ার ভেতর দিক ফুলে যাওয়া।
  • পেটে পূর্বে অপারেশন করা হয়েছে এমন স্থান ফুলে যাওয়া।
  • শরীরে জ্বর চলে আসা।
  • আক্রান্ত স্থানের আশপাশের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হওয়া।

হার্নিয়ায় আক্রান্তের কারণ:

  • পুরনো কাশি।
  • অতিরিক্ত হাঁচি।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য।
  • ভারি বস্তু উত্তোলন।
  • একই পেশির অতিরিক্ত ব্যবহার।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি।
  • তামাক জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার।

হার্নিয়া চিকিৎসা:

সাধারণত দুই ধরনের অপারেশনের মাধ্যমে হার্নিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। হার্নিয়োর‌্যাফি ও হার্নিয়োপ্লার্স্টি।

হার্নিয়োর‌্যাফি: এ পদ্ধতিতে সার্জন কুঁচকিতে একটা ইনসিশন দেওয়া হয়। তারপর বেরিয়ে আসা টিস্যু ঠেলে পেটের মধ্যে ফেরত পাঠানো হয়। অপারেশনের পর সুস্থ হতে চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে।

হার্নিয়োপ্লার্স্টি: এ পদ্ধতিতে সার্জন কুঁচকি এলাকায় এক টুকরো সিনথেটিক মেশ লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেলাই, ক্লিপ অথবা স্টাপল করে এটাকে সাধারণত দীর্ঘজীবী রাখা হয়।

হার্নিয়ার চিকিৎসায় পেটে এসিড তৈরি বন্ধ করে এমন ওষুধও খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

হার্নিয়া প্রতিরোধ:

জন্মগতভাবে থাকলে হার্নিয়া প্রতিরোধ করা যায় না। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে হার্নিয়ার সম্ভবনা কম থাকে।

  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখাতে নিয়মিত ব্যায়াম ও পরিমিত খাবার গ্রহণ করা।
  • খাবার তালিকায় বেশি বেশি টাটকা ফল, শাকসবজি রাখা।
  • ভারী বস্তু উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকা। করলেও উত্তোলন সময় হাঁটু ভাঁজ করে তুলতে হবে। কোনোমতেই কোমর বাঁকিয়ে তোলা যাবে না।
  • তাড়াতাড়ি হাঁটা, দৌড়ানো থেকে বিরত থাকা।

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.