আপনি পড়ছেন

মরণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে বিপর্যস্ত বিশ্ব। সামান্য একটি ভাইরাসের কাছে আজ অসহায় মানবজাতি। প্রতিনিয়ত মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। পাশাপাশি এ নিয়ে গবেষণারও শেষ নেই। কীভাবে ছড়ালো, কীভাবে শরীরে প্রভাব ফেলে, কীভাবেই বা এ থেকে বাঁচা যায় ইত্যকার গবেষণায় ব্যস্ত বিশ্বের গবেষকরা।

research three types spreaded homeএকদল গবেষক মনে করছেন, বিশ্বব্যাপী তিন ধরনের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, আবার মানুষের শরীরে টিকে থাকতে বিবর্তিতও হচ্ছে।

এমনই একটি গবেষণা করেছেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তারা তাদের গবেষণায় দেখেছেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এ, বি ও সি-টাইপের তিন ধরনের ভাইরাস। আবার মানবশরীরে টিকে থাকার জন্য ভাইরাসটি দ্রুত বিবর্তিত হচ্ছে।

সম্প্রতি পিনাস সাময়িকীতে ওই গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরই বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যদিও গবেষণাটি সীমিত পরিসরে পরিচালিত এবং এ নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল ওই গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের জিনগত ইতিহাস নিয়ে প্রায় আড়াই মাস ধরে গবেষণা চালান ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গবেষণায় তারা উল্লিখিত তিনটি ভিন্ন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ দেখতে পেয়েছেন। তবে সেগুলো খুব কাছাকাছি পর্যায়ের ভাইরাস।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, বিজ্ঞানীরা প্রাপ্ত ভাইরাসের অস্তিত্বকে যে তিনটি ধরনে ভাগ করেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে টাইপ-বি ভাইরাসটি।

গবেষণায় দেখা যায়, মূল ভাইরাসটি (টাইপ-এ) মানুষের দেহে প্রবেশ করে বাদুড় থেকে পাঙ্গোলিনসের মাধ্যমে। তবে উৎপত্তিস্থল চীনে এই ভাইরাসের হার ছিল তুলনামূলক কম। বরং দেশটিতে টাইপ-বি ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি দেখা গেছে। এটি গেল ক্রিস্টমাসের মৌসুমে ছড়িয়ে পড়ে।

research three types spreaded innerএকদল গবেষক মনে করছেন, বিশ্বব্যাপী তিন ধরনের করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, আবার মানুষের শরীরে টিকে থাকতে বিবর্তিতও হচ্ছে।

অন্যদিকে, টাইপ-এ বা মূল ভাইরাসটির সংক্রমণ বেশি অস্ট্রেলিয়ায়। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও মূল ভাইরাসটি সংক্রমণ বেশি। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে ৫ লাখের বেশি আক্রান্ত এবং ১৮ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগৃহীত নমুনার দুই-তৃতীয়াংশের মধ্যে টাইপ-এ ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছে।

তবে যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে টাইপ-বি ভাইরাস। দেশটি থেকে সংগৃহীত নমুনার তিন-চতুর্থাংশের মধ্যেই টাইপ-বি ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এর বাইরে সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি পাওয়া যায়।

গবেষকরা বলছেন, টাইপ-সি ভাইরাসটি টাইপ-বি এর বিবর্তিত রূপ। যা সিঙ্গাপুর হয়ে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছে।

গবেষকরা মনে করছেন, সার্স-কভ-২ নামের এই ভাইরাসটি মানবশরীরে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে তার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে বিবর্তিত হচ্ছে। অবস্থা ও পরিবেশ ভেদে সেটি ভিন্ন রকমেও বিবর্তিত হচ্ছে বলে দেখতে পেয়েছেন গবেষকরা।

ভাইরাসটির এমন বৈশিষ্ট্য জানতে পেরে বিস্মিত হয়েছেন খোদ গবেষকরাও। যেমন- তারা গবেষণায় দেখতে পান, জানুয়ারিতে প্রথম দুই ধরনের ভাইরাসের অস্তিত্বই পাওয়া গেছে। আবার উৎপত্তিস্থল চীনে টাইপ-বি ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হলেও যুক্তরাজ্যের পশ্চিম উপকূলে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। সেখানে টাইপ-এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে বিশ্বের মাত্র ১৬০ জন আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনা নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে তাতে আরো এক হাজারের বেশি নমুনা যোগ করা হয়।

ডেইলি মেইল জানিয়েছে, গবেষণায় নেতৃত্ব দেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাকডোনাল্ড ইন্সটিটিউট অব আর্কিওলজিক্যাল রিসার্চের ফেলো ও প্রজননবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড. পিটার ফরস্টার। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের প্রজনন ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই তারা এসব তথ্য জানতে পারেন।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.