কাশ্মিরের সাংবাদিকদের উপর বাড়ছে সরকারি চাপ

ভারত শাসিত কাশ্মিরের সাংবাদিকদের উপর সরকারি চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি অন্তত তিনজন কাশ্মিরি সাংবাদিককে তাদের পেশাদার কাজের জন্য সরকারি চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যে একজন নারী সাংবাদিকও আছেন। তাদের বিরুদ্ধে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে এমন তথ্য প্রচার করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। যে আইনে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, এই আইনটি মূলত সন্ত্রাসবিরোধী একটি আইন। অথচ এটি প্রয়োগ করা হচ্ছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে।

ভারতীয় এডিটর গিল্ড এ বিষয়ে বলেছে যে, সন্ত্রাস বিরোধী একটি আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে সরকার সামগ্রিকভাবে আইনটির অপব্যবহার করছে।

তারা বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যদি কেউ একটি সত্য কথা বলে, তাহলে সেটিকে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের লংঘন বলে অভিহিত করার সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, সম্প্রতি যে তিনজন কাশ্মিরি সাংবাদিক সরকারি চাপের মুখে পড়েছেন, তাদের মধ্যে একজনকে শাসানো হয়েছে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টের কারণে।

গত আগস্ট মাসে কাশ্মিরকে ভারতীয় প্রদেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সরকারি আইন প্রত্যাহার করেছে বিজেপি সরকার। ফলে প্রদেশ হিসেবে কাশ্মির যে সব স্বাধীনতা ভোগ করতো, তার সুযোগ এখন আর নেই। গত আগস্ট থেকে কাশ্মির কার্যত লকডাউন অবস্থায় রয়েছে।

কাশ্মিরি সাংবাদিকরা এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখিত তিনজন সাংবাদিককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবিতে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন।

অভিযুক্ত তিন সাংবাদিকের একজন হলেন গওহর গিলানি। তিনি বিবিসির সাথে কথা বলার সময় তার উপরে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি সব সময় শান্তির পক্ষে অবস্থান করার চেষ্টা করি। আমি আমার ফেসবুকে সব সময় ভায়োলেন্স বিরোধী লেখা লিখি। কিন্তু এরপরও কেনো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে; এটা হাস্যকর।”

একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, “আসলে আইন করে কাউকে চুপ করানোর ইচ্ছে পূরণ করতে চাইলে কিছু করার নেই। আমরা আসলে কেবল আইনটিই অনুসরণ করি।”

কাশ্মিরের সাংবাদিকরা অভিযোগ করে বলেছেন, আধা-স্বায়ত্তশাসনের অধিকার রহিত করার পর থেকে অঞ্চলটিতে সাংবাদিকতা করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরে কাশ্মিরের সাংবাদিকের পুলিশ ডেকে নিচ্ছে এবং তাদের প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিতে বলছে।