‘নারীরা শপিংমলে ঘোরাঘুরি করেন’ এমন মন্তব্যে বেকায়দায় জাপানি মেয়র

জাপানের ওসাকা শহরের মেয়র বলছেন প্রয়োজনীয় বাজার সদাই করার জন্য যাতে পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাজারে যান, কারণ নারীরা গেলে শপিংমলে অহেতুক ঘোরাঘুরি করেন। এমন মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন ওই মেয়র।

করোনাভাইরাসের কারণে জাপানে বর্তমানে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। লোকজনকে বাজারে কম যেতে বলা হয়েছে। একান্ত প্রয়োজনে পরিবারের একজন ব্যক্তি বাজারে যেতে পারবেন। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে একজন ব্যক্তি যতোটা সম্ভব কম মানুষের সংস্পর্শে আসেন।

ওসাকার মেয়র ইচিরো মাতসুই বৃহস্পতিবার রিপোর্টারদের বলেন যে, পুরুষ সদস্যরা যাতে বাজারে যান। কারণ নারীরা গেলে এদিক ওদিক ঘুরে প্রচুর সময় নষ্ট করেন এবং এটা কিনবেন না ওটা; এ নিয়ে দ্বিধায় পড়েন।

৫৬ বছর বয়সী মেয়র বলেন, “পুরুষরা বাজারে দ্রুত প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বাসায় ফিরে যান। সুতরাং আমার মনে হয় প্রয়োজনীয় বাজার করার জন্য পুরুষ সদস্যদেরই বাজারে যাওয়া উচিত, এতে করে বেশি মানুষের সংশ্রবও উপেক্ষা করা সম্ভব হবে।”

এরপরই একজন সাংবাদিক মেয়রকে বলেন এই মন্তব্যটা শোভনীয় হয়নি এবং এটি সম্ভবত ভিত্তিহীন। প্রতিউত্তরে মেয়র বলেন, বিষয়টি তার পরিবারের ক্ষেত্রে সত্য।

কিন্তু এমন মন্তব্য করে অনলাইনে তোপের মুখে পড়েছেন মেয়র। টুইটারে একজন ব্যবহারকারি তাকে নারী ও পুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে অক্ষম হিসেবে অভিহিত করেছেন।

একজন তার মন্তব্যকে ‘নারীদের বিষয়ে কুসংস্কারচ্ছন্ন’ বলে অভিহিত করেন। তিনি আরো বলেন যে, দুনিয়াতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা পুরুষ ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম ও তীক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন নারীও আছেন।

জাপানের নারী শিক্ষিত জনসংখ্যার পরিমাণ ব্যাপক। তারপরও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ তালিকায় তারা ১৫৩ দেশের মধ্যে ১২১তম। এর মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়, জাপানে রজানৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম।

জাপানে এখনো ঐতিহ্যবাহী লিঙ্গসম্পর্কিত দায়িত্ব বন্টণ হয়। যেমন নারীদের মূল দায়িত্ব হলো বাচ্চা লালনপালন ও গৃহস্থলীর কাজকর্ম করা। জাপানি ঐতিহ্যে পেশাদার কাজ বাদ দিয়ে নারীদের বাচ্চা লালন করার প্রতি ও ঘরের কাজের প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে বলা হয়।