৮ বছরের চেয়ারম্যান এখন সবজি বিক্রেতা!

বাজারে আর দশজন সবজি বিক্রেতার সঙ্গে বসে আছেন সৌম্য চেহারার এক বৃদ্ধ। সারাদিন ধরে সবজি বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। অথচ এই বৃদ্ধ ৮ বছর ধরে ছিলেন এলাকার চেয়ারম্যান! দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত সমাজে এটাকে স্রেফ গল্প মনে হতে পারে। কিন্তু এই ঘটনাকে বাস্তব করে তুলেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ

২০০৩ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। নিজের জন্য কিছুই করেননি। গাড়ি-বাড়ী তো অনেক দূরের কথা, বহু বছরের জীর্ণ ঘরটাকে মেরামত করার টাকাও তার কাছে নেই। যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন সরকারের সামান্য বেতনেই সংসার চলেছে। এরপর সবজি বিক্রি থেকে শুরু করে অন্যের খেতে কাজ করেও দিনাতিপাত করছেন এই চেয়ারম্যান।

এ নিয়ে আব্দুর রশীদ বলেন, একদিন মরে যাব, তখন আমাকে দুনিয়ার কর্মকাণ্ডের হিসেব দিতে হবে। তাই কোনোদিন আমানতের কোনো খেয়ানত করিনি। সরকারের কাছ থেকে নিজের জন্য যতটুকু পেয়েছি তার বাইরে এক বিন্দুও ছুঁয়ে দেখিনি। এখন সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি, এ নিয়ে সমস্যার কিছু দেখি না।

অন্য জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন, এমন অনুরোধে মুচকি হাসলেন আব্দুর রশীদ। ‘উপদেশ দিয়ে কিছু হয় না, উপলব্ধি লাগে। কারো উদ্দেশ্যেই আমার কিছু বলার নেই। যারা জনপ্রতিনিধি আছেন তারা নিজেরাই নিজেদের মূল্যায়ন করুক। ভালো-মন্দ নিজেরাই বিচার করুক।

এসময় পাশের একজন সবজি বিক্রেতা হাসতে হাসতে বললেন, ‘রশীদ ভাই কিছুটা পাগলা কিসিমের। নিজের জন্য কিছুই করল না। মানুষকে শুধু দিয়েই গেল।’