ঘ্রাণ ও স্বাদহীনতাও করোনার লক্ষণ!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে পাঁচ মাস হতে চলল। তবুও ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার নিত্যনতুন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যার দরুন বিভিন্ন দেশের সরকারকে এ বিষয়ক নীতিমালা প্রস্তুত করতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। যার ফলে যুক্তরাজ্য সরকার নতুন করে ঘ্রাণশক্তি হ্রাস ও স্বাদ চলে যাওয়াকে করোনাভাইরাসের লক্ষণ হিসেবে তালিকায় যুক্ত করেছে।

প্রতীকী ছবি

বিবিসির বরাতে জানা যায়, এখন পর্যন্ত জ্বর-স্বর্দিতে আক্রান্ত ব্যাক্তিকেই সবাই ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে অন্যান্যদের থেকে আলাদা করে রাখা হতো। কিন্তু লক্ষণ যে আরো আছে তা নাক, কান ও গলার চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরেই বলছিলেন। তারা লক্ষণের তালিকা নবায়ন করার তাগাদাও দিয়ে আসছিলেন।

ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, কারো দেহে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার একটি লক্ষণ দেখা দিলেও সে যেন এক সপ্তাহ নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে রাখে। এসব লক্ষণের মধ্যে অন্যতম অনবরত কাশি, জ্বর, ঘ্রাণ অথবা স্বাদ হারিয়ে ফেলা।

কিংস কলেজ, লন্ডন

এসব কাশি, ঘ্রাণ অথবা স্বাদ হারানো সাত দিন পর চলে যায়। দেহ আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করে। কিন্তু ওই সাতদিন সবার থেকে আলাদা হয়ে বসবাস করা অতীব জরুরি।

বিবিসি বলছে, ঘ্রাণশক্তি অথবা স্বাদ চলে যাওয়া শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণেরই লক্ষণ। সাধারণ ঠান্ডা হলেও মানবদেহে এই সমস্যা হয়। তবে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে জ্বর ও কাশিই প্রধান লক্ষণ বলে অভিমত দিয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

লন্ডনের কিংস কলেজের বিশেষজ্ঞরা ১৫ লাখ মানুষের ওপর করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে এক গবেষণা করেছেন। সেখানে বলা হয়, ভাইরাসটির কারণে দেহে সংক্রমণ হলে অনেকগুলো লক্ষণ দেখা দেয়। এর মধ্যে ক্লান্তি, পাকস্থলিতে ব্যথা, ডায়রিয়ার মতো লক্ষণও আছে।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া অধ্যাপক টিম স্পেকটর বলেন, আমরা প্রাপ্ত্য তথ্য পর্যালোচনা করে ১৪টি লক্ষণের একটি তালিকা তৈরি করেছি। তালিকার অনেক লক্ষণই আছে যা যুক্তরাজ্য সরকারের দেখানো লক্ষণে নেই। মহামারির এই সময়ে এসব লক্ষণ সম্পর্কে ব্যবস্থা নেয়া খুব জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এসব উপসর্গ নিয়ে অনেকেই হয়তো অবহেলা করছেন।

যুক্তরাজ্যের নাক, কান ও গলার চিকিৎসক ও অধ্যাপক নির্মল কুমার বলেন, আমরা কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেখছি ঘ্রানশক্তি অথবা স্বাদ হারিয়ে এখানে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরে দেখা গেলো তারাও করোনায় আক্রান্ত।

এসব লক্ষণ আমলে নিয়ে দেশটির সহকারী প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা অধ্যাপক জনাথান ভ্যান-থাম বলেন, আমাদের কাছে সঠিক সময়ে উপদেশ এসেছে। আমরা এখন ভিন্ন একটি পদক্ষেপ নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। সেইসময়ে এমন একটি তথ্য আমাদের রোগী খুঁজে বের করতে বেশ সহযোগীতা করবে।