করোনা রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি উপহার দেয় যে হাসপাতাল

মরণঘাতী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা থেকেও বেশি কিছু দিচ্ছে আসাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (এএমসিএইচ)। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অধিকাংশ রোগীই শ্রমিক, যাদের বর্তমানে কোনো উপার্জন নেই। তাদের মানসিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হাসপাতাল থেকে যথাযথ ওষুধ দেয়ার পাশাপাশি জামা-কাপড়, খেলনা ইত্যাদি দিয়ে মন ভালো রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আসাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটক

এনডিটিভির বরাতে জানা যায়, আসামের প্রথম করোনা রোগী হলেন ২৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। দিল্লির কাছে গুরগাও এলাকায় তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। লকডাউন শুরু হলে তার চাকরি চলে যায়। আসামে ফেরার পর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তিনি এএমসিএইচে ভর্তি হন। তার পরিবার থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য করাও সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে হতাশা ঘিরে ধরে ওই ব্যক্তিকে। তাকে এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার পদক্ষেপ নেয় এএমসিএইচ কর্তৃপক্ষ। নতুন এক জোড়া কাপড় তাকে উপহার হিসেবে দেয়া হয়। এরপর থেকে বিষয়টি হাসপাতালের একটি রীতিতে পরিণত হয়।

এএমসিএইচ’র এডিশনাল সুপারিনটেন্ডেন্ট আজান্তা হাজারিকা বলেন, ২৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজোড়া কাপড় নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বাড়ি থেকে অন্যকিছু নিয়ে আসাও তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। কারণ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর গ্রামবাসী তাকে সেখান থেকে বিতাড়িত করে দেয়। পরিবারের অন্যদেরও বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। তার মানসিক অবস্থা দেখে আমরা ভাবলাম, এক জোড়া কাপড় উপহার দিলে হয়তো তার মন একটু ভালো হবে।

রোগীদের এই ধরনের উপহার দেয়া হচ্ছে

এনডিটিভি বলছে, পরবর্তীতে এটি এএমসিএইচ’র একটি রীতিতে পরিণত হয়। হাসপাতালের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক এইচ কে গোসওয়ামির নেতৃত্বে চিকিৎসক ও নার্সরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি জামাকাপড়, মোবাইল রিচার্জ, বাচ্চাদের খেলনা ও অন্যান্য সামগ্রী উপহার দিচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে আজান্তা হাজারিকা বলেন, এখানে বেশিরভাগ করোনা রোগীই শ্রমিক। আন্তঃরাজ্য বাস চলাচল শুরু হওয়ার পর এখানে তারা এসেছেন। লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন তারা কর্মহীন। এতে তাদের মানসিক পরিস্থিতিও বেশ নাজুক হয়ে আছে। আমরা তাদের চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি মানসিক পরিস্থিতি ভালো করার পদক্ষেপও নিয়েছি।