প্রমাণ করলেন, তারা আসলে আমেরিকার পক্ষেই

ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় জাতিগোষ্ঠীর সম্পাদিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র যখন একতরফাভাবে বেরিয়ে যায়, তখন ইউরোপের কয়েকটি দেশ বলেছিল, আমেরিকা বেরিয়ে গেলেও তারা চুক্তি রক্ষা করবে। এর জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তাও তাদের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে। কিন্তু সে রকম কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানিকে।

বাঁ থেকে- ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো এবং জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল

এর পরিবর্তে সর্বশেষ তারা যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে এটা প্রমাণ হলো যে, এতদিন তারা শুধু ইরানের সঙ্গে চুক্তি রক্ষার ভান করেছে। আসলে তারা ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার পক্ষেই রয়েছে।

এক বিবৃতিতে ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্স গতকাল বলেছে, তারা ইরানের ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ নবায়নের বিষয়টি সমর্থন করে।

এতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ ইউরোপের এই তিন দেশ। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী অক্টোবরে ইরানের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।

ইরানের সঙ্গে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর পরমাণু চুক্তি

বিবৃতিতে ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্স বলেছে, ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিসহ প্রচলিত অস্ত্র রপ্তানির ওপর ইউরোপ আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ নবায়ন করবে। চীন ও রাশিয়াসহ নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য সদস্য দেশের সঙ্গেও তারা বিষয়টি আলোচনা করবে।

অন্যদিকে, দেশটি তিনটির পক্ষ থেকে এও দাবি করা হয়েছে যে, তারা পরমাণু সমঝোতা মেনে চলছে এবং আন্তর্জাতিক এই সমঝোতা রক্ষায় তাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না। আবার যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের ওই নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের ব্যাপারে যে চেষ্টা ও রাজনৈতিক চাপ দিচ্ছে তারও বিরোধিতা করার ‘অভিনয়’ করছে দেশগুলো।

ইরানি গণমাধ্যমে অভিযোগ করা হয়েছে, উল্লিখিত তিন দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে পরমাণু সমঝোতাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করলেও তা রক্ষায় মূলত কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। এর মাধ্যমে তারা কেবল সময় ক্ষেপণ করেছে।

এ ছাড়া ইরানের সঙ্গে লেনদেনের জন্য ইনস্টেক্স নামের বিশেষ অর্থ ব্যবস্থার কথা বলা হলেও তা বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দেশুগুলো। সুতরাং তাদের সর্বশেষ উদ্যোগে এটাই প্রমাণ হয় যে, তারা শুধু আমেরিকার অনুসরণ আর ইরানের সময়ক্ষেপণ করেছে।