পাটমন্ত্রী: পিপিপির আওতায় চলবে পাটকল

বছরের পর বছর ধরে লোকসানের ঘানি টানা সরকারি পাটকলগুলোকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। আজ রোববার অনলাইনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী- ফাইল ছবি

পাঠমন্ত্রী বলেন, বছরের পর বছর ধরে লোকসান গুনে যাচ্ছে সরকারি পাটকলগুলো। বারবার সরকারি অর্থায়নের পরও পাটকলগুলোর লোকসান কমছে না। তাই এই খাতকে এগিয়ে নিতে পিপিপি'র মাধ্যমে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক (স্বেচ্ছা অবসর) দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার।

তিনি আরো বলেন, শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দেওয়ার পর পাটকলগুলোকে পিপির মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা হবে। যাতে এগুলোকে উৎপাদনমুখী করা যায়। তখন স্বেচ্ছা অবসরে পাঠানো শ্রমিকরা ফের পাটকলগুলোতে কাজের সুযোগ পাবেন।

শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পরিশোধের জন্য সরকারি বাজেট থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে জানিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী আরো বলেন, ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমানে কর্মরত শ্রমিকদের প্রাপ্য বকেয়া বেতন, পিএফ জমা, গ্র্যাচুইটি এবং গ্র্যাচু্ইটির সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ হারে অবসায়ন সুবিধা শতভাগ পরিশোধ করা হবে। এ জন্য বাজেট থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

পাটকল- ফাইল ছবি

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে ২৬টি পাটকল রয়েছে। এর মধ্যে মনোয়ার জুট মিল নামের একটি পাটকল বন্ধ রয়েছে। বাকি ২৫টি পাটকলে বর্তমানে ২৪ হাজার ৮৬৬ জন স্থায়ী শ্রমিক কাজ করেন। এছাড়া প্রায় ২৬ হাজারের মতো দৈনিকভিত্তিক ও তালিকাভুক্ত বদলি শ্রমিক রয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে অবসরে গেছেন ৮ হাজার ৯৫৪ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পাটশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে বর্তমান সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলাদলি, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নীতি, সময়মতো কাঁচাপাট কিনতে না পারা, পাটের গুণগত মান খারাপ হওয়া, শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) দৌরাত্ম্য, অতিরিক্ত জনবল ও পুরাতন যন্ত্রপাতির কারণে লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না সরকারি পাটকলগুলো। অথচ একই সময়ে বেসরকারি খাতের পাটকলগুলো ঠিকই লাভ করছে।

এমতাবস্থায় জনগণের করের টাকা দিয়ে বছরের পর বছর ধরে এই পাটকল টিকিয়ে না রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এগুলোকে সরকারি ব্যবস্থাপনা থেকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

এদিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে খুলনা অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকরা আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন।