মাস্ক চুরি: বিমান ও কাস্টমসের ১০ কর্মকর্তা জড়িত

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবেলায় তমা কনস্ট্রাকশনের আমদানি করা বিপুল পরিমাণ মাস্ক চুরির ঘটনায় ঢাকা কাস্টমস হাউস ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অন্তত ১০ জন কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

এন-৯৫ মাস্ক- প্রতীকী ছবি

আজ রোববার বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল মফিদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহের উদ্দেশে বিদেশ থেকে এন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে তমা কনস্ট্রাকশন। কিন্তু আমদানির পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণে মাস্ক চুরির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে অভিযোগের পর ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হয়।

তিনি আরো বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো গোডাউনের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে মাস্ক চুরির ঘটনাটি ধরা পড়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং জাড়তি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা অবগত করতে বলা হয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর- ফাইল ছবি

এর আগে গত ২ মে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) তমা কনস্ট্রাকশনকে ৩ লাখ পিস এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ দেয়। বিদেশ থেকে আমদানি করে সরবরাহের পর বিপুল পরিমাণ মাস্ক কম পাওয়া যায়। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চায় সিএমএসডি।

চিঠিতে বলা হয়, সিএমএসডিতে ১ লাখ ৮০০ পিসের একটি চালান গ্রহণের সময় মাস্কগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। দৈবচয়নের ভিত্তিতে করা সেই পর্যবেক্ষণে প্রথম ২০টি কার্টুনের মধ্যে ৫-৬টি কার্টুনে ১ থেকে ২টি মাস্কের বাক্স কম পাওয়া গেছে। বাকি কার্টুনগুলোতেও এভাবে মাস্কের বাক্স কম থাকলে তা সংখ্যায় বিপুল হবে। যা অনভিপ্রেত ও সরবরাহ চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের সামিল।

সিএমএসডির চিঠি পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে তমা কনস্ট্রাকশন। নিজস্ব ওই তদন্তে প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত হয় মাস্ক বিমানবন্দর থেকেই চুরি হয়েছে। তাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বেবিচকের কাছে চিঠি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। পরে বেবিচক চেয়ারম্যান ঘটনাটি তদন্তের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করেন। এরপর সপ্তাহব্যাপী তদন্তের পর বিমানবন্দরের অভ্যন্তরেই চুরি এবং ঢাকা কাস্টমস হাউস ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অন্তত ১০ জন কর্মকর্তার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে।