রাজস্ব বোর্ডের গোপন তথ্য ভিয়েতনামের হাতে!

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) গোপন তথ্য ভাণ্ডারের নিয়ন্ত্রণ এখনো ভিয়েতনামের একটি প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সরকারের প্রকল্প তদারকি প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) করা এক প্রতিবেদনে এ কথা উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে প্রতিবেদনটি রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রাজস্ব বোর্ডের গোপন তথ্য ভাণ্ডারের উন্নয়নের কাজ দেওয়া হয়েছিল ভিয়েতনামভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম কর্পোরেশনের কাছে। ২০১৮ সালে তাদের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে গেছে, অর্থও পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো তার পূর্ণাঙ্গ কর্তৃত্ব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বুঝিয়ে দেয়নি তারা। ফলে সেটির পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি।

আইএমইডি বলছে, আয়কর সংক্রান্ত করদাতার তথ্য রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ, সংবেদনশীল এবং গোপনীয় তথ্য। আইন অনুযায়ী এসব তথ্যের গোপনীয়তার সুরক্ষা প্রদান করা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দায়িত্ব। কিন্তু বিষয়টি তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যা রাষ্ট্রের গোপনীয় তথ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

জানা গেছে, কর বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ, স্বয়ংসম্পূর্ণ, আধুনিক, শক্তিশালী, জবাবদিহিতামূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর বিভাগ হিসেবে গড়ে তুলতে 'স্ট্রেনদেনিং গভর্নেন্স ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট' (এসজিএমপি) হাতে নেয় এনবিআর। প্রকল্পটি ২০১৮ সালেই বাস্তবায়িত হয়ে যায়। সেটির জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় প্রায় ৫১ কোটি টাকায় সফটওয়্যার সরবরাহ করেছে ভিয়েতনামের প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে আইএমইডির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি শেষ হলেও এটির ১১ ঝুঁকি ও ২৯টি দুর্বল দিক চিহ্নিত হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- প্রকল্পের তথ্য এখনো ভিয়েতনামের আইটি প্রতিষ্ঠানের কাছে। এ ছাড়া সফটওয়্যারের দুর্বলতার কারণে এর অপব্যবহারের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। যা উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব কমার কারণ হতে পারে।

এদিকে ভিয়েতনামের আইটি কোম্পানির হাতে তথ্য ভাণ্ডারের প্রবেশাধিকার থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এনবিআর সদস্য (ট্যাক্স ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিস) ও প্রকল্পের পরিচালক হাফিজ আহমেদ মুর্শেদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের পরই ভিয়েতনামের কোম্পানিটি পাসওয়ার্ড বুঝিয়ে দিয়েছে। ফলে কেউ আর সার্ভারে প্রবেশ করতে পারবে না। তাছাড়া তারা শুধু সিস্টেম শিখিয়েছে। তাই আইএমইডির দাবি ভুল।