ফ্রিজ করা হলো নাভালনির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

সম্প্রতি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনি। এখনো তিনি পুরোপুরি সুস্থ নন। তার চিকিৎসা অব্যাহত আছে। এরই মধ্যে এবার জানা গেলো রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী এ রাজনীতিবিদের ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এমনকি কার্যত সিল করা হয়েছে তার বাড়িও।

রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনি- ফাইল ছবি

গতকাল বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানান নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমাইশ। তার দাবি, নাভালনিকে প্রাণে ও সম্পদে দুই দিক দিয়েই মারার পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। বিষ প্রয়োগের একদিন পরই তার ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করা হয়। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলের।

কিরা ইয়ারমাইশ জানান, নাভালনি যেদিন বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন, ঠিক এর পরের দিনই তার ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। রুশ প্রশাসন গিয়ে তার বাড়িতে অ্যারেস্ট নোটিশও ঝুলিয়ে দিয়ে আসে। অর্থাৎ, এই বাড়ি এখন আর কেউ থাকতে পারবে না, মর্টগেজ রাখতে পারবে না, এমনকি বিক্রিও করতে পারবে না।

তিনি আরো জানান, কয়েক বছর আগে দায়ের হওয়া একটি মামলার নিরিখে নাভালনির বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে রুশ প্রশাসন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন- ফাইল ছবি

জার্মানির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন নাভালনি। এখন তার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই স্থিতিশীল। কয়েক সপ্তাহ পর তিনি নিজ দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।

৪৪ বছর বয়সী এ নেতা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনা ও রুশ সরকারের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এ জন্য তিনি দেশটির সর্বমহলে সুপরিচিত ছিলেন। এমনকি একাধিকবার পুতিন ও তার রাজনৈতিক বিরোধ প্রকাশ্যেও এসেছে।

অভিযোগ রয়েছে, নাভালনিকে বিষ দিয়ে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছে খোদ রাশিয়ার প্রশাসনই। এ জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে বিষয়টি নিয়ে জবাবদিহি চেয়েছে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ। তবে বার বারই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে রুশ প্রশাসন।

সম্প্রতি একটি ডোমেস্টিক ফ্লাইটে করে সাইবেরিয়া থেকে মস্কোতে যাওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন নাভালনি। সঙ্গে সঙ্গে জরুরি অবতরণ করে তাকে চিকিৎসার জন্য জার্মানির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষক্রিয়ার ফলে তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থ এবং শিগগিরই নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা গিয়েছিল, নাভালনির পানির বোতলের মধ্যেই বিষ ছিল। এ ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠে ইউরোপের রাজনীতি।