বিচারপতি: চক্রান্ত করেই পরিকল্পিতভাবে বাবরি মসজিদ ধ্বংস

ভারতের বহুল আলোচিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে দেয়া রায়ে দেশটির আদালত বলেছে, এর পেছনে কোনো চক্রান্ত ছিল না। কিন্তু এটি মানতে পারছেন না ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি মনমোহন সিং লিবেরহান। তিনি এখনো বিশ্বাস করেন, চক্রান্ত করেই পুরনো মসজিদটি ধ্বংস করা হয়েছে।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ছবি

বাবরি মসজিদ ভাঙার পেছনে চক্রান্ত কাজ করেছে- লিবেরহান কমিশনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এর প্রধান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, আমি এখনো এই সিদ্ধান্তেই বিশ্বাস করি। সেই চক্রান্তের ভেদও উদঘাটন করেছে কমিশন। তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, উমা ভারতীর নেতৃত্বে বিস্তৃত পরিকল্পনা করে মসজিদটি ভাঙা হয়। কোনো অদৃশ্য শক্তি নয়, মানুষেরাই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে লিবেরহান বলেন, আমাদের তদন্ত কমিশনের রিপোর্টই ঠিক ছিল। আমি ভয় বা পক্ষপাত দেখাইনি, সৎ থেকেছি। সেখানে যা কিছু ঘটেছিল, তার সত্য বিবরণ তুলে ধরেছি। কিন্তু সেসব এখন ইতিহাস।

গতকাল বুধবার লাখনৌয়ের সিবিআই আদালতের দেয়া রায় এবং তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে এই সাবেক বিচারপতি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেবল এটুকুই বলেন, লালকৃষ্ণ আদভানি, বাজপেয়ী থেকে শুরু করে সবাই আমার কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাতে যা পেয়েছি, সবই সততার সঙ্গে রিপোর্টে উল্লেখ করেছি। উমা ভারতী এর দায় স্বীকার করেছিলেন। এখন বিচারক তাকে নির্দোষ বলে রায় দিলে আমার কী করার আছে?

সাবেক বিচারপতি মনমোহন সিং লিবেরহান ডানে, রিপোর্ট জমা দিচ্ছেন আর ইনসেটে তার ছবি

লিবেরহান কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, তৎকালীন উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে আদভানি, জোশী ও উমা ভারতীরা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরিকল্পনা করেছিল। পেছনে থেকে মদত দিয়ে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে এটি করেছেন তারা। করসেবকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে নয়, পরিকল্পিতভাবে জড়ো করা হয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভঙ্গ করতে এটি করা হয়। এ ঘটনায় ৬০ জনকে দায়ী করে কমিশন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভাঙার ১০ দিন পর ঘটনার তদন্তে লিবেরহান কমিশন গঠিত হয়। বিস্তারিত তদন্তের পর ২০০৯ সালে এসে প্রতিবেদন জমা দেয় কমিশন।