ফ্রান্সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মুসলিম সংগঠনগুলো

নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগ ও ইসলাম নিয়ে কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বিতর্কিত বক্তব্যের মধ্যে দেশের বাইরে কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে ফরাসি মুসলিম মানবাধিকার গোষ্ঠী কালেক্টিভ অ্যাগেইনস্ট ইসলামফোবিয়া (সিসিআইএফ)।

ফ্রান্সে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মুসলিম সংগঠনগুলো

সোমবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, একটি সংস্থা হিসেবে আমরা আর এই দেশে নিরাপদ পরিবেশের মধ্যে কাজ পরিচালনা করতে পারবো বলে মনে করি না। কারণ আমাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে এবং ফ্রান্স সরকার আমাদের শত্রু হিসেবে টার্গেট করেছে।

সিসিআইএফ বলছে, গত সপ্তাহে ফরাসি সরকার ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা সংস্থাটি বিলুপ্ত করতে চায়। এরপর থেকেই সংস্থাটিকে টার্গেট করে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ঘৃণ্য বার্তা, মৃত্যুর হুমকি আসছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ডানপন্থিদের কাছ থেকে ভুয়া সংবাদ ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ও ইসলামফোবিয়ার নিন্দাকারী সংস্থাগুলোর ওপর রাজপথে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ গত শুক্রবারের আক্রমণকে পিন করার চেষ্টা করছেন। যদিও ইসলামফোবিয়াসহ সন্ত্রাসবাদ এবং বর্ণবাদকে এক করা অসম্ভব।

‘এসব কারণে, সিসিআইএফ বন্ধ করার সরকারি প্রয়াসের ফলাফল যাই হোক না কেনো, আমরা আমাদের কার্যকলাপের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য এবং আমাদের দলগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে আন্তর্জাতিকভাবে সংস্থার কার্যক্রম প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন দেখিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাখ্যা করার ঘটনায় প্যারিসে স্কুল শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হত্যাকে কেন্দ্র করে প্যারিসের একটি মসজিদ বন্ধ করে দেয় ফ্রান্স সরকার। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে দেশজুড়ে চরমপন্থী মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপারেশন ও তদন্ত শুরু করেছে ফরাসি পুলিশ। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের কার্যকলাপ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘৃণা বার্তা দেয়ার অন্তত ৮০টি ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পুলিশি অপারেশন চলছে এবং আরো গ্রেপ্তার হতে পারে।

অন্তত এক ডজন ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে অপারেশন চালানো হচ্ছে এবং ৫০টিরও বেশি সংগঠনের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছে ফরাসি পুলিশ। দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে কোনো গোষ্ঠী হিংসা ছড়াচ্ছে কি না- তা খতিয়ে দেখার জন্য এ অভিযান। যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।