সংকটাপন্ন সৌমিত্র লাইফ সাপোর্টে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত থেকে সাড়া না দেয়ায় তাকে সম্পূর্ণ কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দেয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় প্রবীণ এই অভিনেতার পরিবারের সঙ্গে বৈঠকে করছেন চিকিৎসকরা।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

কলকাতার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জনপ্রিয় অভিনেতা সৌমিত্রের শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে পুরোপুরি অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়। হৃদযন্ত্র কম কাজ করায় শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হচ্ছে না তার। কোনো ধরনের চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না তিনি।

চিকিৎসকরা জানান, সৌমিত্রের শরীরে নতুন করে নিউমোনিয়ার উপসর্গ ধরা পড়েছে। এতে করে তার রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট কমছে, সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের তারতম্য হচ্ছে। ফুসফুসের সংক্রমণ রয়েছে, গতকাল দুপুর থেকে কিডনির অবস্থাও খারাপ।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৮৫ বছর বয়সী এই অভিনেতার অন্ত্রে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা দেয়া দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তার শারীরিক পরিস্থিতি মারাত্মক সংকটে রয়েছে।

এমতাবস্থায় আজ সৌমিত্রের পরিবারের সঙ্গে বসছেন তার চিকিৎসায় নিয়োজিত ১৬ সদস্যের চিকিৎসক দল। সেখানে অভিনেতার চিকিৎসা ও শারীরিক সর্বশেষ অবস্থা এবং ভবিষ্যত চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় এই অভিনেতা ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ক্যামেরার সামনে। পেয়েছেন দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরস্কার। শেষদিকে অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন। করোনার দীর্ঘ অবরুদ্ধ অবস্থার পর আবারও শ্যুটিংয়ে ফিরেছিলেন সৌমিত্র।

এর মধ্যেই গত ৫ অক্টোবর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের করোনা ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অগ্রগতি হলেও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও কমতে থাকে।

তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিটের (আইটিইউ) কেবিনে স্থানান্তর করা হয় তাকে। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, অবস্থা ‘ভালো নয়’। কারণ করোনা ছাড়াও আগে থেকে তার শরীরে ছিলো ক্যান্সার। আছে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস।