কিভাবে ধূমপান থামাবে কিম জং উনের দেশ?

২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধূমপান নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগে স্বাক্ষর করে উত্তর কোরিয়া— কিম জং উনের দেশ। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। বরং উত্তর কোরিয়ায় ধূমপানের হার ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, উত্তর কোরিয়ার অর্ধেকের বেশি পুরুষ ধূমপান করেন, তবে কোনো নারী ধূমপান করেন না।

সম্প্রতি দেশটিতে ধূমপানবিরোধী নানা ক্যাম্পেইন চলছে। কিন্তু দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উনকে প্রায়ই প্রকাশ্যে ধূমপান করতে দেখা যায়। এমন একটি দেশ কিভাবে ধূমপানের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তা এক বিস্ময়কর ব্যাপার।

আরো “মার্জিত ও স্বাস্থ্যকর” জীবন-যাপন নিশ্চিত করতে গণজমায়েতের স্থানগুলোতে ধূমপান করা যাবে না, চলতি মাসের শুরুতে উত্তর কোরিয়ায় এমন একটি আইন পাশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, এই আইন অমান্য করলে শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

নতুন আইনে কী বলা হয়েছে?

নতুন পাশ করা তামাক নিষিদ্ধ আইনে এমন কিছু নতুন বিধি-বিধানের কথা বলা হয়েছে, যা জনগণের “জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য” অবশ্যই পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রের নতুন তামাক-বিরোধী আইনে সামাজিকভাবে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদন ও বিক্রির উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

কোন কোন জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ থাকবে, সে বিষয়েও এই বিস্তারিত বলা হয়েছে। যেমন— রাজনৈতিক ও মতাদর্শ বিষয়ক শিক্ষাকেন্দ্র, নাটক ও সিনেমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, গণপরিবহনের মতো জায়গায় ধূমপান করা যাবে না।

কখন উত্তর কোরিয়া ধূমপান-বিরোধী অভিযান শুরু করে?

২০০৫ সালে যখন উত্তর কোরিয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধূমপান নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগে সই করে, তখন থেকেই মূলত দেশটিতে ধূমপান-বিরোধী ক্যাম্পেইন চলছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে, সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক উল্লেখ করা লেবেল সেটে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গণজমায়েতের স্থানে ধূমপান বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

২০১৯ সালে দেশটিতে ধূমপানে ক্ষতিকর দিক কী, তা নিয়ে জানিয়ে ক্যাম্পেইন শুরু হয়, এবং বিদেশে তৈরি হওয়া তামাকজাত পণ্য আমদানি করা বন্দ করা হয়।

কোরিয়ান সেন্ট্রাল টিভিতে এমন একটি বার্তা প্রচার করা হয়েছে, যাতে বলা হয় যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ধূমপান করে, তিনি একজন “বিবেকহীন” মানুষ।

রাষ্ট্র-নায়কই যেখানে চেইন-স্মোকার…

উত্তর কোরিয়ার ধূমপান বিরোধী তৎপরতার সবচেয়ে বড় বাধা মনে করা হয় দেশটির সরকারপ্রধান কিম জং উনকে। শিশুদের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে কিংবা মিসাইল টেস্টের পর্যবেক্ষক; সব ভূমিকাতেই তাকে ধূমপানরত অবস্থায় দেখা গেছে।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ট্রেনে করে ভিয়েতনাম যাওয়ার সময় এক বিরতিতে তাকে ধূমপান করতে দেখা যায়। এ সময় তার জন্য অ্যাশট্রে ধরে ছিলেন তার বোন ইয়ো জং।

কিংম জং উনের স্ত্রী রি সল জো একাধিকবার বলেছেন যে, তিনি কিম জং উনকে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু কিম তার কথা “শোনেননি”।