'চোরের ভিটা' মানতে পারছেন না গ্রামবাসী

একটি গ্রামের নাম 'চোরের ভিটা'। ১৯৬২ সালে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের গ্রামটির নামকরণ করেছিলেন এক জমিদার। তবে এই নাম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চরম অসন্তুষ্ট স্থানীয় মানুষজন। সে জন্য নাম পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

নাম পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধনে গ্রামের জনতা

বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়ে গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, এমন নামের কারণে মানুষ আত্মীয়তা করতে চায় না এবং বিয়ে-শাদীও ভালো এলাকায় হয় না। দ্রুত গ্রামের নামটি পরিবর্তন করার দাবি জানাই। কারণ এ নিয়ে মানুষজন খুব সমস্যার মধ্যে আছে।

গ্রামটিতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। সেটির নাম 'চোরের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়'। এ নিয়ে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তারা বলেন, গ্রামের নাম বললে মানুষ হাসে এবং এটা বলতেও লজ্জা লাগে। মানুষ জিজ্ঞেস করে, বাপ-দাদায় কি চোর ছিলেন? এসব শুনতে ভালো লাগে না। তাই গ্রামের নাম পরিবর্তন করলে ভালো হয়।

এদিকে, গ্রামের নাম পরিবর্তন চেয়ে আজ বুধবার নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা ও ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহবুবুর তালুকদার। এ দাবিতে সম্প্রতি গ্রামবাসী মানববন্ধনও করেছেন। সেখানে তারা 'চোরের ভিটা' পরিবর্তন করে 'বিজয়নগর' করার দাবি জানান।

মোহাম্মদ মাহবুবুর তালুকদার বলেন, ১৯৬২ সালে জরিপের সময় জমিদারের খাজনার বই হারিয়ে গেলে জমিদার ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামের নামকরণ করেন 'চোরের ভিটা'। আর সেই নামের ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও নামকরণ করা হয় এবং আমি সেই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী। কিন্তু অফিস-আদালত কিংবা যেখানেই যাই, নামটি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।

নাম বদলের জন্য মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরও আবেদন করা হয়েছে। আমরা গ্রামের নাম পরিবর্তন করে বিজয়নগর করার জন্য দাবি জানাই।

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজী আবদুর রহমান বলেন, নাম পরিবর্তনের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে একটি আবেদন এসেছে এবং শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।