মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে সরকার

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশজুড়ে লাউড স্পিকার ও সাউন্ড সিস্টেমসহ যত্রতত্র মাইক ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে মধ্যরাত পর্যন্ত মাইক বাজিয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। এতে করে আশপাশের মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ক্ষতিসহ মানুষ নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তাই এসব নিয়ন্ত্রণে এবার কঠোর হচ্ছে সরকার।

ইতোমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নেয়ার জন্য নির্দেশনা ও মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ৬ষ্ঠ সভার সুপারিশের ভিত্তিতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।

বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সভা-সমাবেশ, সামাজিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে মাইক বাজানো হচ্ছে। এতে করে ব্যাপকভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এ দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হলো।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, সংসদীয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেয়া হলেও মাঠ প্রশাসন, বিশেষ করে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকরা নিজ নিজ এলাকার বাস্তবতার নিরিখে যে পদক্ষেপ নেবেন সেটাই চূড়ান্ত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, আবাসিক এলাকায় শব্দের মাত্রা দিনের বেলা সর্বোচ্চ ৫৫ ডেসিবল ও রাতে ৪৫ ডেসিবলের মধ্যে হতে হবে। বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৬৫ ডেসিবল ও রাতে ৫৫ ডেসিবল এবং শিল্পাঞ্চলে দিনে ৭৫ ডেসিবল ও রাতে সর্বোচ্চ ৬৫ ডেসিবল পর্যন্ত শব্দের মাত্রা থাকতে পারে। আর হাসপাতাল এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবল ও রাতে সর্বোচ্চ ৪০ ডেসিবল গ্রহণযোগ্য।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ এর আওতায় এলাকাভিত্তিক শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। দ্বিতীয়বার অপরাধ করলে ৬ মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।