‘বিরোধীদের জয়ে’ কুয়েতি শাসকদের কপালে ভাঁজ!

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতের ৫০ সদস্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ২৯ জন নারী প্রার্থী। কিন্তু তাদের কেউ জিততে না পারায় এবার পুরুষরাই থাকছেন দেশটির আইনসভায়। নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩২৬ জন।

কুয়েতের নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন এক নারী

ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, ২০১২ সাল থেকে কুয়েতের পার্লামেন্টে নারীর প্রতিনিধিত্ব ছিল, যা গেলো বছরে এসে একজনে দাঁড়ায়। এবার তিনিও হেরে যাওয়ায় ৮ বছর পর নারী এমপি-শূন্য হলো দেশটি।

১৯৬৩ সালে গঠিত কুয়েতের পার্লামেন্ট নির্বাচনে নারীরা ভোটাধিকার পেয়েছেন মাত্র ১৫ বছর হলো। এর মধ্যেই নিয়মিত নির্বাচন হওয়া দেশটির পার্লামেন্ট মেয়েদের প্রতিনিধি শূন্য হলো।

এ ঘটনাকে ‘মেয়েদের জন্য হতাশাজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির উইমেন কালচারাল ও সোশ্যাল সোসাইটির প্রধান লুলওয়া সালেহ আল-মুল্লা। তিনি বলেন, তবে তুলনামূলক কমবয়সী পুরুষ প্রার্থীদের জয় আশা সঞ্চার করছে।

কুয়েতের নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন এক পুরুষ

জানা যায়, দেশটির পার্লামেন্ট সক্রিয় থাকলেও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ রয়েছে। এ কারণে শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকছে আমীর ও আল সাবহ পরিবারের হাতে। মূলত তারাই সরকার গঠন ও পরিচালনা করে থাকে, দেশের নীতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নও তাদের হাতেই।

এ বছরের নির্বাচনটি আলোচনায় আসার কারণ হলো- কুয়েতি নতুন আমীর নওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহ দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই প্রথম নির্বাচন। গত সেপ্টেম্বরে ৯১ বছর বয়সে মারা যান সাবেক আমীর শেখ আল সাবাহ।

নতুন আমীর নওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহ

তবে শাসকদের কপালে ভাঁজ তৈরি করেছে সদ্য সমাপ্ত এবারের নির্বাচন। কেননা, প্রার্থীরা ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচন করার নিয়ম থাকলেও অনেকে তৈরি করেছেন অঘোষিত জোট বা গোষ্ঠী। রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে থাকা এমন ‘বিরোধী গোষ্ঠী’ এ বছর প্রায় অর্ধেক আসনে জয়লাভ করেছে।

এ গোষ্ঠীটি গত নির্বাচনে ১৬টি আসন জিতেছিল, যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪টিতে। এ ছাড়া এ নির্বাচনে ৪৫ বছর বা তার কম বয়সের ৩০ জন প্রার্থী জয় পেয়েছেন। এর ফলে বিরোধী গোষ্ঠীর সংস্কার আন্দোলন আরো বেগবান হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।