নতুন কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে হেফাজত

ব্যাপক চাপের মুখে থাকলেও চলমান ভাস্কর্য-মূর্তি ইস্যুতে নতুন কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আগামী সপ্তাহে এ কর্মসূচি আসতে পারে। তবে কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া হতে পারে, তা জানা যায়নি।

সংগঠনটির লোগো

বিষয়টি নিশ্চিত করে হেফাজতের প্রচার সম্পদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি বলেন, নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন শীর্ষ নেতারা, কথা হচ্ছে দেশের শীর্ষ আলেমদের সঙ্গেও। আগামী সপ্তাহে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।

তার বরাত দিয়ে ডয়চে ভেলে জানায়, নেতাদের নামে দায়ের করা মামলাগুলো রাজপথে ও আইনগতভাবে মোকাবেলার কথা ভাবছে হেফাজত। এ জন্য সারাদেশে আইন সহায়তা সেল গঠন করা হচ্ছে।

মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি বলেন, আমরা মনে করি না যে, ভাস্কর্য ও মূর্তি একই জিনিস। সে কারণে আমাদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আর মামলার ঘটনাকে আমরা চাপ মনে করছি না, ভীতও নই।

আল্লাম বাবুনগরী, মামুনুল হক ও ফয়জুল করিম

হেফাজত নেতারা জানান, তারা কোনো সংঘাত নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধান চান। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। সময় পেলে নেতারা দেখা করবেন, বিষয়টি নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান তারা।

সংগঠনটির আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে এরই মধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীমের নামেও আরেকটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে। এসব মামলা তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

বলা হচ্ছে, কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বাবুনগরী ও মামুনুল হকের কথায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে ঘটনাটি ঘটানো হয়। ফলে মামলাটি তদন্ত পর্যায়ে এসে এই দুই নেতাকে আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর

কুষ্টিয়ার ঘটনাটি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ ও ‘ঠিক কাজ নয়’ উল্লেখ করে এক প্রশ্নের জবাবে মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি বলেন, আমরা সরকারকে ভাস্কর্য ভেঙে ফেলতে বলেছি, তারা ভাঙবে। অন্য কাউকে ভাস্কর্য ভাঙতে বলিনি আমরা।

এদিকে, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ৫ মের শাপলা চত্বরের ঘটনায় ঢাকাসহ সারাদেশে ৮৩টি মামলা করা হয়, সেসব ফের সচল করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নাম রয়েছে, যাদের মধ্যে জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাইনুদ্দিন রুহীসহ শীর্ষ অনেক নেতা রয়েছেন।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১৮টি মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে, দুটির দেয়া হয়েছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন। যে মামলাটির বিচার শেষ হয়েছে, তার আসামিরা খালাস পেয়েছেন।