তৃণমূলে ফের ভাঙন, শুভেন্দুসহ ৪২ ‘নেতা’ বিজেপিতে

সব জল্পনা-কল্পনা ও গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অমিত শাহের হাত ধরে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শুভেন্দু অধিকারী। পশ্চিমবঙ্গ জয়ে মরিয়া দলটিতে যোগ দিয়েছেন তার সঙ্গে ৪২ জন নেতা।

বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারীর যোগদান

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, আজ শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে বিশাল জনসভায় বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহের হাতে উত্তরণী পড়ে দল বদলান তিনি।

এদিন শুভেন্দুর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেন আরো ৪২ জন নেতা। তাদের মধ্যে ১ জন তৃণমূলের সংসদ সদস্য, ৯ জন বিধায়ক, ১ জন সাবেক সংসদ সদস্য ও ১ জন সাবেক রাজ্যমন্ত্রী রয়েছেন। এ ছাড়া কংগ্রেসের ১ জন বিধায়কও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

সমাবেশে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তার দলকে আমি কাঁথি শহর থেকেই বের করে দেবো। আমার কাছে জন্মদাত্রী মায়ের পরেই ভারতমাতা, এই দুই মায়ের উপাসনা করি।

বক্তব্য রাখছেন শুভেন্দু

এক সময় ‘দেশ বাঁচাও, বিজেপি হটাও’ আওয়াজ তুলেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বোধোদয় হওয়ায় এখন আওয়াজ তুলছি- ‘ভাইপো হটাও, দেশ বাঁচাও’। এই ভাইপোর তোলাবাজি বন্ধ করতে হবে।

শুভেন্দুকে ‘তরুণ তুর্কি নেতা’ আখ্যা দিয়ে অমিত শাহ বলেন, তিনি যোগ দেয়ায় বিজেপির আরো শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। এতে একুশে (আগামী নির্বাচন) মুখ্যমন্ত্রী মমতার পতন নিশ্চিত হবে।

এর ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শুভেন্দু অধিকারীকে ‘সবচেয়ে বড় তেলাবাজ’ আখ্যা দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। দলটির আইনজীবী সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, সিপিএমের আমলে হলদিয়া বন্দরের তোলা তুলতেন লক্ষণ শেঠ, তার স্থানটিই নিয়েছেন শুভেন্দু। তার থেকে বড় তোলাবাজ আর কে আছে?

তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে মমতা

রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ও দাপুটে তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী মেদিনীপুরের তমলুকের সাবেক সংসদ সদস্য। তিনি দল ছাড়ায় ফের ভাঙনের মুখে পড়ল টানা দুই মেয়াদে রাজ্য ক্ষমতায় থাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতার দল। এর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির এক সময়ের ডান হাত হিসেবে পরিচিত মুকুল রায়ও সম্প্রতি দল ছেড়ে যোগ দেন বিজেপিতে।

ডয়চে ভেলে জানায়, রাজ্যটি জয়ে মরিয়া বিজেপির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতারা ইদানীং প্রায়ই বাংলার মনীষীদের নাম নিচ্ছেন। এর মাধ্যমে দলটি বাঙালি সংস্কৃতিতে ‘বহিরাগত’র তকমা মুছতে চাইছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘জনগণমন’ গানটি জাতীয় সঙ্গীত করেছে ভারত। এটি পরিবর্তন করে আজাদ হিন্দ বাহিনীর সঙ্গীতকে জাতীয় সঙ্গীত কারার দাবি তুলেছে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি। এ নিয়ে ভারতজুড়ে নানা ধরনের বিতর্ক দেখা দিলে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে তা ব্যবহার করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এতে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপিও।