ভাড়াটিয়াদের ‘নতুন’ তথ্য যাচাইয়ে নামছে পুলিশ

নাগরিকদের সুরক্ষা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবার রাজধানী ঢাকার সকল বাসিন্দার পেশা যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এক্ষেত্রে কেউ যদি তার ব্যক্তিগত ফরমে চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী লেখেন, তবে তিনি আদৌ চাকরি করছেন কি না কিংবা কীসের ব্যবসা করছেন, তা সরেজমিন গিয়ে যাচাই করা হবে।

জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানীতে এমন কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের নাগরিক তথ্যভাণ্ডারে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আবার অনেকের তথ্য থাকলেও সেগুলোতে গরমিল রয়েছে। এমতাবস্থায় চলতি সপ্তাহ থেকে আবারও নাগরিক তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেছে পুলিশ।

ডিএমপি সূত্র বলছে, এবার বাসিন্দার পেশাও যাচাই করবে পুলিশ। কারণ, অপরাধীরা তাদের পেশা সাধারণত গোপন করে রাখে। ফলে তাদের আটক করতে অসুবিধায় পড়তে হয়। তাই নতুন করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় নাগরিক তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম। মূলত অপরাধ ব্যবস্থাপনার জন্য নানাবিধ তথ্য সংগ্রহের অংশ হিসেবে ঢাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এ কার্যক্রম। এক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একটি ইউনিক ইনডেক্স নম্বর আছে এবং সেটি দিয়ে সিস্টেমে সার্চ দিলে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। তবে এতদিন পেশার জায়গায় কেবল চাকরিজীবী লিখলেই হতো। কিন্তু কী চাকরি, সেটা আর উল্লেখ থাকতো না।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, প্রতিটি বিটে নতুন করে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বিশেষ করে যেসব ভাড়াটিয়া বাসা বদলেছেন, তাদের তথ্য হালনাগাদ করা হবে। কারণ, বিভিন্ন অপরাধী ও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা বাড়ির মালিককে ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়ে বাসা ভাড়া নিচ্ছেন। তাই বাড়ির মালিকদের সচেতন করাও এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য।

এ ছাড়া প্রতিটি বিটে পেশাদার খুনি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, চোর, ছিনতাইকারী, মাদক সংক্রান্ত অপরাধী, নারী উত্ত্যক্তকারী, জঙ্গিবাদ ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নামও হালনাগাদ করবে পুলিশ।

এ বিষয়ে অতি‌রিক্ত পু‌লিশ ক‌মিশনার (ডিবি) হা‌ফিজ আকতার বলেন, এই প্রক্রিয়াটি অপরাধ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অপরাধের রহস্য উদঘাটন সহজ হয়। ইতোমধ্যে এই তথ্য কাজে লাগিয়ে অনেক অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, করোনায় অনেক ভাড়াটিয়া পরিবারসহ ঢাকা ছেড়ে চলে যাওয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দিয়েছেন মালিকরা। সম্প্রতি কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের নাগরিক নিবন্ধনে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই এ সিদ্ধান্ত।