স্বাস্থ্য সচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, ওসি প্রত্যাহার

স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানকে নিজ উপজেলা কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার উপজেলা আওয়ামী লীগের এক প্রতিবাদ সভায় এ ঘোষণা দেয়া হয়। এর আগে গতকাল সচিবের চানপুরের গ্রামের বাড়িতে হামলা হয়।

স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান

কটিয়াদী ডিগ্রি কলেজের সামনে আয়োজিত সভায় স্বাস্থ্য সচিবকে অবাঞ্জিত ঘোষণা করেন দিলীপ ঘোষ। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তিনি।

সভায় স্বাস্থ্য সচিবের বিষোদগার করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন প্রমুখ।

সভা শেষে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নামে মামলার প্রতিবাদে মিছিল বের করা হয়। কলেজের সামনে থেকে মিছিলটি থানা ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নানের বাড়ি

সরকারি কাজে বাধা ও হামলা এবং হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে আজ কটিয়াদী থানায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম, অন্যটি করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী আতিকুর রহমান।

প্রথমটিতে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়। পরেরটিতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে।

এ দুই মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে কটিয়াদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, আসামিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভা

এদিকে, স্বাস্থ্য সচিবের বাড়িতে হামলার পর প্রত্যাহার করা হয়েছে কটিয়াদী থানার ওসি এম এ জলিলকে। এ সংক্রান্ত আদেশের কপি আজ দুপুরে থানায় পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন হোসেনপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোনাহর আলী।

পুলিশ জানায়, আদেশে প্রত্যাহারের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ফলে স্বাস্থ্য সচিবের বাড়িতে হামলা ঠেকাতে না পারায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়িতে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় একদল লোক। ঘটনার সময় স্বাস্থ্য সচিব ওই বাড়িতেই ছিলেন। এ ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) আশরাফুল আলমের ওপর হামলা হয়। একপর্যায়ে তাকে ফেলে দেয়া হয় পুকুরে। এতে আহত হন তিনি।

এমপি নূর মোহাম্মদ

ঘটনার পর স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের পরিবার দাবি করেছে, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদের লোকজন তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, একই গ্রামের আবদুল মান্নান ও নূর মোহাম্মদের মধ্যে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন উত্তেজনার পর তা হামলায় রূপ নেয়।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিবের ভাই নাসির উদ্দিন বলেন, অধিকাংশ হামলাকারী আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক, তাদের আমরা চিনি। হামলায় নেতৃত্ব দেন চানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুরাদ মিয়া।