যুক্তরাষ্ট্রে একটি গবেষণা হয়েছিল ১৯৪৮ সালে। ওই সময় মার্কিনিদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল হার্ট অ্যাটাক। সুতরাং গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল এটা জানা যে, কী কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়? দেশটির প্রায় ৫ হাজার নাগরিক ওই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন৷

healthy fat new choiseসাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যকর চর্বির চাহিদ বেড়েছে

গবেষণার ৯ বছর পর প্রকাশিত ফলে জানা যায়, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান এবং শরীরের অত্যধিক ওজনই হার্ট অ্যাটাকের কারণ। তাই ওজন কমাতে যেসব খাবারে কম চর্বি রয়েছে সেসব খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়৷ তবে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সেই পরামর্শ থেকে সরে এসেছেন৷ এবার নতুন পরামর্শ দিচ্ছেন তারা৷

ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতেও চর্বিযুক্ত খাবার একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ অনেক বেশি মানুষ হার্ট অ্যাটাকে মারা যাচ্ছিল৷ এর জন্য দুর্বল হৃদপিন্ডে চর্বির প্রভাবকেই দায়ী করা হয়।

এতে বলা হয়েছে, বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সিনেটর জর্জ ম্যাকগভর্ন ১৯৮০ সালে জাতীয় খাদ্যাভ্যাস লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিলেন।

ওই খাদ্যাভ্যাসে বলা হয় যে, মার্কিনিদের কী খাওয়া উচিত, আর কী খাওয়া উচিত নয়। এর মাধ্যমে মার্কিনিরা প্রথমবারের খাবারের ব্যাপারে একটি নীতিমালা পেল। এতে চর্বিযুক্ত খাবার ও খারাপ কোলেস্টেরল থেকে দূরে থাকতে বলা হয়৷ একই সঙ্গে অতিরিক্ত ওজন কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চার পরামর্শ দেয়া হয়৷

healthy fat new choise innerপ্রায় সব ধরনের বাদামে আছে স্বাস্থ্যকর চর্বি

কিন্তু আশ্চার্যের বিষয় হলো- কম চর্বিযুক্ত খাবার কিংবা নিয়মিত শরীরচর্চা কোনোটাই মার্কিনি ও জার্মানদের ওজন কমাতে পারেনি। বরং ওজন না কমে আরো বেড়েছে৷

একটি মার্কিন সংস্থাও, যারা হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যরক্ষা নিয়ে কাজ করে, ওই সময় কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পক্ষে প্রচার চালিয়েছিল৷

অবশ্য ওই সময় একমাত্র মার্কিন কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে ডা. রবার্ট অ্যাটকিনস এই ধারণার বিরোধিতা করেন৷ তিনি কম নয় বরং উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবারের পক্ষে ছিলেন৷

ডয়চে ভেলে বলছে, কম চর্বির খাবার দিয়ে লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে প্রথমবারের মতো সন্দেহ তৈরি হয় চলতি শতকের শুরুতে।

বিখ্যাত কখরেন ইন্সটিটিউট ২০০১ সালে কম চর্বির খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আগের করা সব গবেষণা আবার যাচাই করার উদ্যোগ নেয়৷ কিন্তু- কম চর্বির খাবার আয়ু বাড়ায়- এমন প্রমাণ তেমনটা নেই বলেই তারা জানতে পারে৷

বিষয়টি নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার নারীর ওপর জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা যায়, কম চর্বির খাবার যারা খেয়েছেন তাদের হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের ঝুঁকি, যারা খাননি- তাদের চেয়ে কমেনি৷

প্রায় ৩০ বছর পর তাই চর্বিযুক্ত খাবারের পক্ষে কিছুটা মতামত লক্ষ করা যায়৷ আর তখন থেকেই ভালো চর্বি এবং খারাপ চর্বি নিয়ে পার্থক্য করা শুরু হয়৷ যেমন- ভেজিটেবল অয়েল বা ভোজ্য তেল৷

যুক্তরাষ্ট্রে এখন যে খাদ্যাভ্যাসের নীতি মানা হয়, তাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট আর কোলেস্টেরল অর্থাৎ খারাপ চর্বির ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে৷

সাম্প্রতিক অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তচাপ উঠা-নামার ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের তেমন কোনো প্রভাব নেই৷

গবেষকরা বর্তমানে এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে, কয়েক দশক ধরে সুস্বাস্থ্যের জন্য কম চর্বির খাবার খাওয়ার যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, কখনোই তার পক্ষে কোনো প্রমাণ ছিল না৷

অবশ্য এখন যে কম চর্বির খাবার পাওয়া যাচ্ছে না তা নয়৷ বরং কম চর্বির খাবার এখনও পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হলো- যারা খাদ্য উৎপাদন করছেন তারা বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না৷

Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.