আপনি পড়ছেন

বিশ্বে সন্ত্রাসী দলগুলোর দৌরাত্ব অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকা উপমহাদেশে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেট এবং আল-কায়েদার হুমকি অব্যাহত থাকবে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাদের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সহযোগিতায় সন্ত্রাসীদলগুলোর আসন্ন হুমকিসমূহ নিয়ে বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

iraq syria is warআইএসের হামলায় ইরাক ও সিরিয়ায় অসংখ্য স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, ফাইল ছবি

নিরাপত্তা পরিষদের অ্যানালেটিক্যল সাপোর্ট অ্যান্ড স্যাংশনস মনিটরিং টিম তাদের ২৭তম প্রতিবেদনে ইরাক ও লেভ্যান্ট ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএল-দা’য়েশ), আল-কায়েদাকে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি এবং দল নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেশগুলোর নজরে এসেছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘২০২০ সালের দ্বিতীয়ার্ধে আইএসআইএলের তৎপরতার উচ্চগতি বছরের প্রথমার্ধের মতোই অব্যাহত ছিলো। অন্যদিকে বিভিন্ন স্থানে জেষ্ঠ্য নেতাদের হারিয়ে এসময় কালে আল-কায়েদার সদস্যরা তাদের নের্তৃত্ব এবং কৌশলগত দিকনির্দেশনা নিয়ে নতুন চাপ ও চ্যালেঞ্জের মধ্যে ছিলো।’

করোনা মহামাররি ছড়িয়ে পড়ার কারণে আল-কায়েদা এবং আইএসের গতিবিধি যেমন কমে এসেছে, তেমনি তাদের তহবিল আসার শৃঙ্খলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘সংঘাতের অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাসীদের চেয়েও করোনা মহামারি আইন-শৃঙ্খল বাহিনীর সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিতে এসব অঞ্চলে জঙ্গীদের হুমকিও ক্রমশ বেড়েছে। অন্যদিকে যেসব অঞ্চলে সংঘাত চলছে না সেখানে সন্ত্রাসীদের হুমকিও তুলনামূলক কম। মহামারির কারণে অর্থনীতি এবং রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি এসময়ে সহিংস উগ্রপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে মহামারির কারণে সন্ত্রাস-বিরোধী কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে সবজায়গায় সন্ত্রাসী হুমকিও বৃদ্ধি পাবে।’

জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে উদ্দেশ্য করে প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ‘ইরাক এবং সিরিয়া এখনো আইএসআইএলের প্রধান অঞ্চল। আর আল-কায়েদার প্রধান ঘাটি ইদলিব, এ বিষয়গুলো খুবই উদ্বেগের।’

প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আমেরিকার সশস্ত্র হামলায় টিকে থাকার পরেও সন্ত্রাসীদলগুলো তাদের পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনা করছে।’

iman al zawahiriআল কায়েদার বর্তমান প্রধান আইমান আল-জাওয়াহিরি

প্রতিবেদনটির মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, ‘আফগানিস্তান এখনো আইএসআইএল এবং আল-কায়েদার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপপশি আফ্রিকায় নিজেদের ঘাঁটির সংখ্যা বাড়াতে সেখানে আরো বেশি সংঘাতের অঞ্চল তৈরি করছে। তালেবানরা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করায় আল-কায়েদাদের নের্তৃত্ব ধরে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলো আইএসআইএল এবং আল-কায়েদার একীকরণ সম্ভবত বহিরাগত আক্রমণের পরিকল্পনাগুলিকে আবারো উজ্জীবিত করে তুলতে পারে। যা অঞ্চলগুলোতে প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব অঞ্চলে সন্ত্রাসীদলগুলো সম্প্রতি অগ্রগতি করেছে তার বেশিরভাগই আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোয় সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। এ মহাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে মোজাম্বিকের ক্যাবো ডেলগাদো অঞ্চল অন্যতম।’

প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আফ্রিকায় তাদের কার্যক্রম বিস্তারের ফলে লিবিয়া বাদে সব সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় আল-কায়েদা এবং আইএসআইএল এখন আর যৌথ ফ্রন্টের অংশ নয়। এছাড়া নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলো সন্ত্রাসীদের প্রযুক্তির অপব্যবহার বিশেষ করে অর্থ, অস্ত্র, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে সচেতন হয়ে উঠার কারণে আইএস অথবা আল-কায়েদা কোন দলই গত বছরের শেষের দিকে এসব ক্ষেত্রে সুবিধা করতে পারেনি।

তবে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ এবং সংঘাতে নিয়োজিত দেশগুলো এখন পর্যন্ত কোন সমাধানে পৌঁছুতে পারেনি বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি করোনা মহামারি ২০২০ সালে সন্ত্রাসীদের ওপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং লকডাউনের কারণে সন্ত্রাসীদের গতিশীলতা ও লক্ষ্য কমিয়ে আনতে হয়েছে। আইএস সদস্যরা এসময় সহজে কোথাও যেতে পারেনি, তহবিল সংগ্রহ করতে পারেনি, এমনকি সংঘাত বর্হিভূত অঞ্চলে নিজেদের কার্যক্রমও অব্যাহত রাখতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন উঠে গিয়েছে এবং বেশিরভাগ দেশে স্বাভাবিক জীবনযাপন পুনরায় শুরু হয়েছে। আর এতে করে সন্ত্রাসী দলগুলো আবারো হামলা শুরু করতে পারে। যা ২০২১ সালের সন্ত্রাসী হামলার প্রধানতম কারন’ হয়ে উঠতে পারে।

২০২১ সালে আইএস নতুন হামলা চালাতে পারে এমনটা উল্লেখ করে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘অনেক মানুষ এখনো ভ্রমণ বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে, অনলাইনে বেশি সময় কাটাচ্ছে। এর ফলে আইএস বিমুগ্ধ শ্রোতা পাচ্ছে। যা সম্ভবত অশনাক্ত অবস্থাতেই থেকে যাবে। এছাড়া সংঘাত বহির্ভূত অঞ্চলগুলো মহামারির কারণে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিভাবে চাপে থাকায় সেখানে সন্ত্রাসী হুমকি দীর্ঘমেয়াদি হবে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.