মোদির সফর বাংলাদেশের জন্য লাভের, বলছে ভারতীয় ডেইলি

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশে আসছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনাকালে প্রথমবার বিদেশ সফরে আগামী ২৬ মার্চ ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে তার।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ফাইল ছবি

এ সফর নিয়ে বাংলাদেশে এক ধরনের রাজনীতি চলছে। এর মধ্যেই বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসে। তাতে মোটাদাগে দাবি করা হয়, এতে দ্বিপাক্ষিক সংযোগ আরো বাড়বে এবং দিল্লি নয়, ঢাকাই বেশি লাভবান হবে।

প্রতিবেদনে প্রত্যাশা করা হয়, মোদির সফরে দুই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র অবকাঠামো ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংযোগের প্রচেষ্টা জোরদার হবে। সংশ্লিষ্ট খাতে দুই দেশের মধ্যে সই হতে পারে বেশ কয়েকটি সমঝোতা। এসব পদক্ষেপ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে পরবর্তী ধাপে নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক পরিকল্পনায় বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানকে প্রজাপতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে এতে। যার মূল দেহ বাংলাদেশ আর এক পাখা রাশিয়াসহ মরিশাস অঞ্চল ও অন্য পাখা জাপান ও অস্ট্রেলিয়া অঞ্চল।

এমন অবস্থান দেখিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে মুক্ত, উন্মুক্ত, সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধ ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। সেইসঙ্গে প্রতিবেশী বৃহৎ অর্থনীতি ভারতের কাছ থেকে পেতে পারে নানা সুবিধা।

বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা

স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে ভূ-অর্থনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে এই অঞ্চলে নয়াদিল্লির উদীয়মান অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারে ঢাকা।

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয়, দু’দেশের মধ্যে পরিবহন সংযোগ অবাধ হলে ঢাকার জাতীয় আয় ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এতে এদেশের প্রায় সব জেলাই লাভবান হবে, বেশি লাভ হবে পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোর।

উভয় দেশের সরকার এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গত কয়েক বছর ধরে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি গতি পেয়েছে ফেনী নদীর সেতুসহ বেশ কিছু অবকাঠামো সংযোগ প্রকল্প চালুর মাধ্যমে।

কেবল সড়কপথেই নয়, রেলপথ, বিমান, অভ্যন্তরীণ নৌপথ ও উপকূলীয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও ভারত-বাংলাদেশের সংযোগ বেড়েছে। এর মধ্যে ৬টি অচল রেলপথের ৫টি সচল করা হয়েছে, নতুন ২টিসহ অন্যটিও চালুর চেষ্টা চলছে।

ফেনীতে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু

এ ছাড়া বিমানের ক্ষেত্রে আসামের গুয়াহাটি-ঢাকার রুট পুনরায় চালু, ভারতের উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোর সঙ্গে চট্টগ্রাম-সিলেটসহ বিভিন্ন জেলাকে সংযুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

পণ্য পরিবহন ও উপকূলীয় ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি থাকায় মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারছে ভারত। এর মাধ্যমে দেশটির পণ্য বাংলাদেশে ও উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পাঠাতে পারছে। নতুন ও সম্প্রসারিত বন্দর ব্যবহারেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এসব রাজস্ব আয়ের নতুন উৎস খুঁজতে সহায়তা করবে বাংলাদেশকে। সেইসঙ্গে প্রতিকূল অর্থনৈতিক ধাক্কা মোকাবেলায়ও সহায়তা করবে, দাবি ভারতীয় ইকোনমিক টাইমসের।