আপনি পড়ছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা সদস্য প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ নিয়ে দেশটির বিগত চার প্রেসিডেন্টই ‘আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধ’ শেষ করতে চাইলেন।

afgan 1আফগানিস্তান কেন ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপর কী

সিএনএন বলছে, সেনা সদস্য প্রত্যাহারে বাইডেনের ১১ সেপ্টেম্বর দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। ২০ বছর আগে ২০০১ সালের এ দিনটিতে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি ও পেনসিলভিনিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা হয়। এ প্রেক্ষাপটই যুক্তরাষ্ট্রকে তালেবানদের লক্ষ্য করে আফগানিস্তানে হামলার পথ তৈরি করে দেয়। প্রায় দুই দশকের এ যুদ্ধে ২ হাজার ৩০০ আমেরিকান সেনার মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছে অনেক। বিপরীতে আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের হতাহতের ঘটনা অগণিত। ইতিমধ্যে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জনগণের দেওয়া করের ২ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।

এতকিছুর পর যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সেনা সদস্য যেদিন আফগানিস্তান ত্যাগ করবে, এদের মধ্যে অনেকে এমনও আছেন, যার জন্মই হয়েছে ৯/১১ এর পরে। আফগানিস্তানেরও কিছু অংশের দখল নিতে পারে তালেবান, যাদের কেউ কেউ হয়তো ২০০১ সালে ওই এলাকার নেতৃত্বে ছিলেন। ন্যাটোর নেতৃত্বে আফগানিস্তানে প্রায় ১০ হাজার বিদেশি সেনা অবস্থান করছে। তাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা সদস্য আড়াই হাজারের বেশি।

২০ বছর আগে তালেবানকে ক্ষমতা থেকে হটানোর পর এখনকার আফগানিস্তান একেবারেই ভিন্ন এক দেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটি শান্তির পথে অগ্রসর হতে পারে। আবার এমন আশঙ্কাও রয়েছে, তালেবান ক্ষমতার দখল নিলে আবারো সহিংস হয়ে উঠতে পারে আফগানিস্তান।

afgan 2আফগানিস্তান কেন ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপর কী

আফগানিস্তানে বিবিসির সংবাদদাতা সেকান্দার কেরমানি বলছেন, অনেকেই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত তালেবানকে চাঙ্গা করবে। যদিও এটি তালেবানের সঙ্গে হওয়া সমঝোতার চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। তবে এ অল্প সময়ের মধ্যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের ওপর হামলা করবে, এমন সম্ভাবনা কম।

তিনি আরও বলেন, তবে অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তালেবান হয়তো সেনা প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করবে এবং তারপরই বিজয় অর্জন কিংবা আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালাবে। তখন আফগান সরকারের পক্ষে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে। গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে। কারণ তালেবানকে প্রতিহত করতে আফগান সরকার এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার ওপর নির্ভরশীল।

কাবুলে ইনস্টিটিউট অফ ওয়ার অ্যান্ড পিস স্টাডিজের নির্বাহী সভাপতি তামিম আসে সতর্ক করে বিবিসিকে বলেন, ‘সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা ঘোষণার ফলে একটা রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে আফগান দলগুলোর ওপর চাপ তৈরি হবে। অনথ্যায় সিরিয়ার মতো রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধও শুরু হয়ে যেতে পারে।’

সেনা প্রত্যাহারের দিন ঘোষণা করে বুধবার (১৪ এপ্রিল) বাইডেন বলেন, এখনই সময় আমেরিকান সেনাদের দেশে ফিরে আসার। চতুর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি সেনাদের ফেরত আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। দুজন রিপাবলিকান ও দুজন ডেমোক্র্যাট এমন প্রতিশ্রুতি দিলেন। কিন্তু আমি এটি পঞ্চমজন পর্যন্ত যাক, তা চাই না।

বাইডেনের এ সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে। সিনেটের মিথ ম্যাকননেল এ সিদ্ধান্তকে ‘মারাত্মক ভুল’ আখ্যায়িত করেছেন। তবে টেক্সাস সিনেটর ট্রেড ক্রুজ ও মিসৌরি সিনেটর জস হাওলে সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন।

afgan 3আফগানিস্তান কেন ছাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপর কী

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাইডেনের এমন ঘোষণার পর আমেরিকানদের একটি প্রজন্ম দক্ষিণ ভিয়েতনামের নাটকীয় পতনের কথা স্মরণ করছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র সেখান থেকে সরে আসার পরই গৃহযুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানি হয়। এ রক্তপাতের দায় আমেরিকা কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। আফগানিস্তানেও একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি তাদের মানসিকতার ওপর ফের দাগ কাটতে পারে। তবে বাইডেন আমেরিকার দীর্ঘতম এ যুদ্ধ শেষ করে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সাফল্য নিতে চাইবেন, এমন রাজনৈতিক আলোচনা জোরালো হচ্ছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.