পুলিশ: ‘ক্ষমতা দখলের চেষ্টায়’ মামুনুল হক, দিয়েছেন ‘চাঞ্চল্যকর তথ্য’

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ‘উস্কানি দিয়ে মাঠে নামিয়ে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা’ করছিলেন হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক। রিমান্ডে তিনি এমন ‘তথ্য দিয়েছেন’ বলে আজ মঙ্গলবার দাবি করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর মাওলানা মামুনুল হক, ফাইল ছবি

এদিন এক সাংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ- কমিশনার হারুন অর রশিদ। জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক ‘অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য’ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রদের মামুনুল বলতেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে হেফাজতে ইসলামের সমর্থন ছাড়া আর কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’

মোহাম্মদপুরের যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে মামুনুল হককে, সে বিষয়ে পুলিশ বলছে, মামলার বাদীর অভিযোগ এবং ঘটনার ভিডিও দেখিয়ে আসামিকে প্রশ্ন করা হয়। মসজিদে তাবলিগ জামাতের সাদ অনুসারীদের মারপিটের কারণ জানতে চাইলে মামুনুল বলেন, ‘এটি ঠিক হয়নি’।

জিজ্ঞাসাবাদে নিজের কয়েকটি ওয়াজের ভিডিও দেখানো হয় মামুনুল হককে- এমনটা উল্লেখ করে হারুন আর রশিদ বলেন, বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ‘জোশের কারণে তা বলে ফেলেছেন’ বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন আর রশিদ

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বলেন, ধর্মভীরু মানুষকে ‘উস্কানি দেয়া’ ওই বক্তব্যের মধ্যে রয়েছে- শাহরিয়ার কবিরকে ‘মুরগি চোর’ বলা, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু ও সাবেক বিচারপতি মানিককে পাওয়ামাত্র জুতাপেটা করা।

মামুনুল হকের পেছনে কোনো রাজনৈতিক দলের ‘মদদ’ আছে কিনা, সে বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান তিনি। ‘ইন্ধন’ দিয়ে থাকলে অথবা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে জানান হারুন।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হককে গত রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে ওই দিন দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে পুলিশ জানায়, মোহাম্মাদপুর থানায় ২০২০ সালের ৭ মার্চ দায়ের হওয়া একটি নাশকতার মামলায় মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন আদালত।

জানা গেছে, মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কেবল রাজধানীতেই অন্তত ১৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের ঘটনার পর এবং বাকি দুইটির একটি মোহাম্মদপুরের আর অন্যটি এ বছরের ৫ এপ্রিল পল্টন থানায় দায়ের করেন এক যুবলীগ নেতা।