ফিলিস্তিনিদের সামরিক মহড়া, যুদ্ধের প্রস্তুতি

আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন উত্তেজনা তীব্র রূপ নিয়েছে। ফিলিস্তিনি মুসল্লি এবং ইসরায়েলি পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ, একে কেন্দ্র করে ইসরায়েলে রকেট হামলা, জবাবে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টাহামলা, এ পরিস্থিতিকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাকর বলে বর্ণনা করেছে আরব সংবাদমাধ্যমগুলো। এমন সময় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় মুজাহিদিন ব্রিগেডসের সামরিক মহড়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিজেদের লড়াইয়ের প্রস্তুতি প্রদর্শন করার জন্য এ সামরিক মহড়া চালানো হয় বলে জানিয়েছে প্রতিরোধ আন্দোলনটি। গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি অংশে ‘ইফেকটিভ প্রোমিজ’ নামে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।

গাজা উপত্যকায় মুজাহিদিন ব্রিগেডের সামরিক মহড়া

প্রেসটিভির খবরে বলা হয়, উপত্যকার স্থল এবং সমুদ্রভাগে প্রতিরোধ যোদ্ধারা নানা রকম যুদ্ধদৃশ্যের অবতারণা করে। ইসরায়েলি সেনা এবং অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিরা সাম্প্রতিক সময়ে আল-কুদস শহরে যে সহিংসতা চালাচ্ছে, এ মহড়ার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার মুজাহিদিন ব্রিগেডের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে অনুষ্ঠিত এ মহড়ায় ফিলিস্তিনের হামাস এবং ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ দুই সংগঠনের নেতারা কুদস শহরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। এ সময় তারা মহড়ায় অংশ নেওয়া প্রতিরোধ আন্দোলনের সদস্যদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।

আল-কুদস শহরে গত কয়েকদিনের সংঘর্ষে বহু ফিলিস্তিনি আহত হন এবং প্রায় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। মাঝেমধ্যে সেখানে ইহুদিরা মিছিল বের করছে এবং আরবদের ধ্বংস কামনা করে স্লোগান দিচ্ছে। শুক্রবার ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে ইহুদিদের সঙ্ঘর্ষও বাঁধে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর যৌথ মহড়া

গত শুক্রবার রাতে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে প্রায় ৩০টি রকেট নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হয়। এ প্রেক্ষাপটে এ সামরিক মহড়াকে বেশ অর্থবহ বলে আখ্যায়িত করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এ বছরের গোড়ার দিকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠনগুলো গাজায় যৌথ মহড়া করে। ফিলিস্তিনের ১২টি প্রতিরোধ সংগঠন এতে অংশ নেয়। ফিলিস্তিনের সব প্রতিরোধ সংগঠনের সমন্বয়ে গাজায় এটা ছিল প্রথম কোনো সামরিক মহড়া। মহড়া চলাকালে ড্রোন উড়ানোর পাশাপাশি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া হয়। সেখানে ইসরায়েলের আগ্রাসন প্রতিহত করার শপথ নেওয়া হয়।

যেসব প্রতিরোধ সংগঠন এতে অংশ নেয় সেগুলো হলো, হামাস, ইসলামি জিহাদ আন্দোলন, ফিলিস্তিন মুক্তির জন্য গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, ফিলিস্তিনের গণপ্রতিরোধ কমিটি। এছাড়া আরও ছোট ছোট সংগঠনও এ মহড়ায় যোগ দেয়। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর যৌথ অভিযান পরিচালনাকারী সংগঠনের দফতর থেকে বলা হয়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে এ মহড়ার উদ্যোগ। এর কয়েকমাস পর মুজাহিদিন ব্রিগেডসের এ মহড়া অনুষ্ঠিত হলো।