আপনি পড়ছেন

চলতি বছরেই আফগানিস্তান ত্যাগ করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর সেনা। এমন এক সময়ে এ জোট আফগানিস্তান ত্যাগ করছে, যখন দেশটিতে তালেবান, আল-কায়েদা ও আইএস ফের শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

afgan hআফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র

এমন পরিস্থিতির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে নতুন কোনো কৌশল রয়েছে কিনা তা ভাবাচ্ছে বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, শারীরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছাড়লেও সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধ ছেড়ে দিচ্ছে না। বরং কৌশল বদলে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে যুদ্ধকে জিইয়ে রাখতে চায় পেন্টাগন।

বিবিসি বলছে, নাইন-ইলেভেনে ওসামা বিন লাদেন কর্তৃক হামলার আগ মুহূর্তেও আফগানিস্তান সম্পর্কে হুঁশিয়ারি জানিয়েছিল পশ্চিমা গোয়েন্দারা। আফগানিস্তান থেকে কোনো অভিযান পরিচালনা করা হতে পারে এমন তথ্য ছিল তাদের কাছে।

১১ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকদের ভাবাচ্ছে। কারণ, এবারো পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আফগান পরিস্থিতি সম্পর্কে বেশ ভালো করে জেনেই সেনা প্রত্যাহার করছে।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান জেনারেল স্যার নিক কার্টার বিবিসিকে বলেন, ‘এমনটি হবে তা আমরা আশা করিনি।’ গত ২০ বছর ধরে পশ্চিমা জোট সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে যে রাজনীতি করেছে, তা হঠাৎ করেই হুমকির মুখে। একই সাথে আফগানিস্তানেরও ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায়।

afgan 3 1সেনা সরালেও আফগানিস্তানে যুদ্ধ ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্র

দি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিসের (আইআইএসএস) আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জন রেইন বলেন, ‘সমস্যা হলো, এ পরিস্থিতিতে আফগান সরকারের কিছু একটা করণীয় ছিল। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী পৌঁছতে পারবে না। আর এর মূলে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, তারা কখনো সেভাবে ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলেনি।’

তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আফগানিস্তান নিয়ে ভিন্ন রণকৌশল রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন কতিপয় বিশেষজ্ঞ। ২০০৯ ও ২০১১ সালে বাইডেন আফগানিস্তান সফর করেছিলেন। তখন থেকেই বাইডেন আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতির বিরুদ্ধে ছিলেন। তিনি মনে করতেন, পদাতিক বাহিনীর চেয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বিমান বাহিনীকে ব্যবহার করা ভালো। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট গেটস বাইডেনের ওই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ছিলেন।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আফগানিস্তানে এখন যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা বাড়াতে পারে। ওবামা প্রশাসনের সময় থেকে আফগানিস্তানে ব্যাপক হারে ড্রোন হামলা শুরু হয়। বাইডেনের সময়েই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত থেকে শুরু করে ইয়েমেনের কিছু অঞ্চলে পর্যন্ত বিমান হামলা বিস্তৃত করে যুক্তরাষ্ট্র। তখনই প্রথমবারের মতো সম্মুখযুদ্ধের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে।

গত ২০ বছর ধরে সিআইএ, এমআইসিক্স ও পশ্চিমা অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আফগানিস্তানের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা এনডিএসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এক পশ্চিমা নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, ‘আমরা এখনো এনডিএসকে তাৎপর্যপূর্ণ সহায়তা করতে সক্ষম। এখন শুধু আমাদের নতুন অপারেটিং মডেলের সঙ্গে তাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে।’ এর অর্থ দাঁড়ায়, নিজ দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র তালেবান বা এ জাতীয় গোষ্ঠীকে ঘায়েল করবে।

afgan 2 1সেনা সরালেও আফগানিস্তানে যুদ্ধ ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্র

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র গোপন আস্তানা গড়ে আল-কায়েদা ও তালেবানের শীর্ষস্থানীয়দের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে। সম্ভবত বিকল্প রণকৌশলের সাথে গোপন এ আস্তানা ও আক্রমণের পরিকল্পনা অব্যাহত থাকবে।

আফগনিস্তানে আগামীতে সরকারে তালেবানরা আসবে, এমনটি বলা যাচ্ছে না। তবে পশ্চিমা সেনাবিহীন আফগানিস্তানে এখন তালেবানরা কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাবে, সে প্রশ্ন সামনে আসছে। আফগান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট হলে স্বাভাবিকভাবেই তারা তালেবানের লক্ষ্যবস্তু হবে। আর তখনই আফগানিস্তানে ড্রোন হামলাসহ বিকল্প কৌশল প্রয়োগের পরিস্থিতি তৈরি করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

ব্রিটিশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কাজ করা জন রেইন মোটের ওপর আফগানিস্তানের হতাশাজনক চিত্রই তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে শুধু চরমপন্থা নয়, বহিরাগতদেরও সন্ত্রাসবাদে যুক্ত হওয়ার মতো কৌশলগত সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আর এটিই দেশটির আগামী প্রজন্মকে চরম হুমকিতে ফেলে দিয়েছে।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.