আপনি পড়ছেন

ভারতসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ২০০৪ সালে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ বিপর্যয়কে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক চাল চালেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় সামলাতে বাইরের সহায়তার প্রয়োজন নেই। এখন থেকে ভারতই তার ক্ষতি সারাতে যথেষ্ট। যদি প্রয়োজন হয়, বাইরের সহায়তা নেওয়া হবে।

modi hমোদির বৈশ্বিক স্বপ্ন ধূলিসাৎ

মোদির এ বক্তব্য ভারতের অর্থনৈতিক শক্ত ভিতকেই সামনে এনেছিল। এরপরও এ ধারা অব্যাহত ছিল। ২০০৫ সালে হ্যারিকেন ক্যাটরিনায় বিপর্যস্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র এবং ২০০৮ সালে ভূমিকম্পে সিচুয়ানে বিপর্যয়ের পর চীনকে ত্রাণ দিতে চেয়েছিল বিজেপি সরকার। ২০১৮ সালে বন্যায় কেরালা রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে বাইরের সাহায্যের চাপ সত্ত্বেও মোদি তার জাতীয় গর্বকেই সমুন্নত রাখতে সক্ষম হন।

ভারতের মসনদে আসার পর থেকেই মোদি হিন্দুত্ববাদের সাথে আরেকটি স্লোগানের বৈশ্বিক প্রসার ঘটান, তাহলো- ‘আত্মনির্ভর ভারত’। আর এ দুটি ঘিরে বিজেপি সরকার তার নীতিতে পরিবর্তন এনেছিল।

ফরেন পলিসি বলছে, তবে গত সপ্তাহে অক্সিজেনের অভাবে রাস্তায় মানুষের মৃত্যু এবং সৎকারের সুযোগ না পাওয়া মানবদেহ কুকুর ছিড়ে খাচ্ছে যেন ভারতের আসল চিত্র তুলে ধরেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারত। ইতিমধ্যে ৪০টির বেশি দেশ থেকে ভারতকে সাহায্য নিতে হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকার যে অক্সিজেন প্লান্ট ও ট্যাংকার এবং ওষুধসামগ্রী সরবরাহ করছে, সামাজিক মাধ্যমে ভারতের কূটনীতিকরা তার সরাসরি প্রশংসা করছেন।

যদিও বিব্রতকর এ চিত্র থেকে সবার দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রীংলা ইউটার্ন নিয়ে বলেছেন, ‘আমরা সহায়তা দেওয়ার বিনিময়ে বাইরে থেকে সাহায্য নিচ্ছি। এটি আত্মনির্ভরশীল এমন এক বিশ্ব যেখানে একে অপরের সাথে কাজ করে।’

modiমোদির বৈশ্বিক স্বপ্ন ধূলিসাৎ

বিশ্লেষকরা বলছেন, হর্ষবর্ধন শ্রীংলা পরস্পরের সাথে কাজ করার বিশ্বকে উল্লেখ করলেও এটি মোদির অধীনে ভারতের পররাষ্ট্র নীতির সাথে বেমানান। বরং করোনা মহামারি দেশটির একগুয়ে চরিত্রকে সবার সামনে এনেছে। ‘বিশ্বগুরু’ (বিশ্বের নেতা) হওয়ার উচ্চাঙ্ক্ষাসহ প্রধানমন্ত্রী মোদির সাত বছরে নেওয়া জাতীয়তাবাদী অভ্যন্তরীণ এজেন্ডাগুলো এখন মিথ্যার বেসাতি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের আধিপত্য রুখে দেওয়ার জন্য ভারত দেশটির সাথে ‘সামরিক জোট’ কোয়াড গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। এ জোটের বাকি দুই দেশ হলো, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের সাথে বৈরিতা জিইয়ে রাখতে দক্ষিণ এশিয়ার জোট সার্ককে একেবারে অকার্যকর করে দিল্লি। যে চীনকে দাবাতে এতকিছু ভারতের, করোনা দুর্যোগে তারাও হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বিরোধের পরিবর্তে সুসম্পর্ক বজায় রাখলে ভারতকে আজ এমন বিব্রত হতে হতো না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি ভারতের বৈশ্বিক শক্তি হয়ে ওঠার উচ্চাভিলাষে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। মোদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর একবার বলেছিলেন, কূটনীতির বাতাসে অনেক বল থাকবে। কোনোটিই বাদ না দেওয়ার আত্মবিশ্বাস ও ক্ষমতা দেখাতে হবে। কিন্তু এখন সমস্ত বল মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এগুলো বাছাই করে নতুন শুরুর জন্য ভারতকে আরও মানবিক, সততা ও বাড়তি প্রচেষ্টা দেখাতে হবে। কিন্তু করোনা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সেটি দেশটি করতে পারবে কিনা তাই দেখার।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.