গবেষণা: দুটি বিপজ্জনক ধরনেও কার্যকর ফাইজারের টিকা
- Details
- by মাহফুজ সাদি
প্রাণঘাতী করোনার বেশ কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট এখন পর্যন্ত মানব শরীরে শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো প্রতিরোধে কোন কোম্পানির তৈরি টিকা কতটা কার্যকর, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা করোনার অন্তত দুটি বিপজ্জনক ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে সক্ষম বলে জানিয়েছে গবেষণা। বলা হচ্ছে, ধরন দুটির দ্বারা সৃষ্ট রোগ থেকেও সুরক্ষা দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে এই টিকার।
গতকাল বুধবার প্রকাশিত দুটি গবেষণায় বলা হয়, করোনার এই ধরন দুটি হলো- যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া B.1.1.7 এবং দক্ষিন আফ্রিকার B.1.351। ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার ১৪ দিনের মধ্যে প্রথম ধরনটি প্রতিরোধে সক্ষম হয়েছে ৮৭-৮৯.৫ শতাংশ মানুষ। দ্বিতীয় ধরনের ক্ষেত্রে এই হার ৭২.১-৭৫ শতাংশ।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, টিকাটি কাতার ও ইসরায়েলে প্রয়োগের ওপর ভিত্তি করে গবেষণার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, করোনার দুটি বিপজ্জনক ধরনের কারণে সৃষ্ট গুরুতর রোগ এবং মৃত্যুহার কমে এসেছে।
এই ফলাফলকে ‘অসাধারণ সুখবর’ বলে বর্ণনা করেছেন লন্ডন স্কুল হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের গবেষক ডা. অ্যানেলিজ ওয়াইল্ডার স্মিথ। তিনি বলেন, এখন আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারছি, করোনার বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগজনক সংক্রমণের বিরুদ্ধে টিকাটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যাবে।
একটি গবেষণায় গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত টিকা নেয়া ২ লাখ কাতারির তথ্য নেয়া হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত শনাক্ত হওয়াদের অর্ধেক ছিল B.1.351 ধরনে আক্রান্ত, বাকি ৪৪.৫ শতাংশের সংক্রমণ ছিল B.1.1.7 ধরনে।
এ বিষয়ে কাতারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. লাইত আবু-রাদ্দাদ বলেন, সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ধরনটির বিরুদ্ধে আমরা ৭৫ শতাংশ সফলতা পেয়েছি। এই ফলাফল সত্যিই দারুণ ব্যাপার।
দ্বিতীয় গবেষণাটি ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ফাইজারের টিকা নেয়া প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার ইসরায়েলির ওপর চালানো হয়। সেখানে ৯৫ শতাংশ সংক্রমণ ছড়িয়েছে B.1.1.7 ধরনের মাধ্যমে, যা সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচিত।
ল্যানসেটে প্রকাশিত এই গবেষণা বলছে, টিকার দুই ডোজ নেয়া কম বয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ধরনটি প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশের বেশি কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশের বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা।
দেশটিতে টিকাটির দুটি ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের মৃত্যুঝুঁকি কমেছে ৯৬.৭ শতাংশ পর্যন্ত। তবে এক ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে যা ৭৭ শতাংশ।
এর আগে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, ভাইরাসটির সবচেয়ে মারাত্মক এবং সংক্রমক ধরন হচ্ছে- B.1.1.7। এর বিরুদ্ধে ফাইজারের টিকা অনেক বেশি কার্যকর। তবে B.1.351 প্রতিরোধে টিকাটির কার্যকারিতা কিছুটা কম।
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর