অবশেষে জানা গেল খুনি, ১৬ বছরেও যায়নি ধরা

রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে ২০০৫ সালে চারতলা একটি বাড়ির নিজ ফ্ল্যাটে খুন হয়েছিলেন শিক্ষকা কাজী সুহিন নাহার। ওই ঘটনায় তখন মামলা হলেও প্রায় ১৬ বছর পরে এসে আসামি শনাক্তের কথা জানা গেলো। তবে সব চেষ্টা করেও এখনো তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

১৯৮৮ সালে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়া নিহত সুহিনের দুই ছেলে থাকতেন যুক্তরাষ্ট্রে। সে কারণে ধানমণ্ডি থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহতের ভাই কাজী শহীদুল আলম। বহু হাত ঘুরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পড়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে। এ বছরের গত ৩১ মার্চ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংস্থাটি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি এখনো গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করেননি সংশ্লিষ্ট আদালত। যদিও সিআইডি বলছে, আসামি গ্রেপ্তার হলে মামলাটি ফের পুনরুজ্জীবিত হবে।

এ বিষয়ে সিআইডির বিশেষ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলছেন, খুনিকে শেষ পর্যন্ত শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা। তবে তাকে পাওয়া না যাওয়ায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি এখনো। এ ক্ষেত্রে সব রকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন তারা।

সূত্রমতে, মামলাটি প্রথম দুই বছর ধানমণ্ডি থানায় থাকার সময় তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে ৭ বার। পরে ৬-৭ বছর ডিবি পুলিশের কাছে ছিল মামলাটি, দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকেও। তারা সবাই আসামি গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হয়।

এরইমধ্যে ‘শরিফ’ নামে সন্দেহভাজন আসামিকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করে ডিবি পুলিশ। মামলাটি সিআইডির হাতে পড়লে ২০১৭ সালে ওই ব্যক্তির ছবি প্রচারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয় তথ্য মন্ত্রণালয়কে। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি এখনো।

কে এই শরিফ?

সিআইডি বলছে, নিহত সুহিন নাহারের একজন বান্ধবীর নাম ছিল সেলিনা হোসেন রত্না। তার কাছে ৬-৭ বছর বয়সী শরিফকে নিয়ে এসেছিলেন একজন গৃহকর্মী। ছেলেটি অসহায় এবং আশ্রয় খুঁজছিল বলে জানা যায়।

কিশোরগঞ্জের শরিফকে মাস দুয়েক নিজের কাছে রাখার পর সুহিন নাহারের কাছে দেন সেলিনা। ছেলেটিকে আদর-যত্নে বড় করার পর কাজ খুঁজে নিতে বলেন সুহিন। পরে সে চলে গেলেও হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহখানেক আগে ঢাকায় ফেরেন শরিফ, ঘটনার আগের রাতে ওই বাসায়ই ছিল সে।

ভবনটির বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সুহিন নাহারের মৃতদেহ উদ্ধারের দিন দুপুরে দুটি বস্তা নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায় শরিফ। এরপর থেকে তাকে আর কেউ কোথাও খুঁজে পায়নি।