টিকা নিয়ে বৈষম্যের ‘গুরুতর অভিযোগ’ ডব্লিউএইচও’র

করোনা টিকার অধিকাংশ বিশ্বের ধনী দেশগুলোর দখলে থাকায় টিকা ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক বৈষম্যের অভিযোগ এনেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর ফলে দেশগুলোর ১৫ শতাংশ জনগণের কাছে রয়েছে মোট টিকার ৪৫ শতাংশ!

এমন গুরুতর অভিযোগ এনে সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানান, বৈষম্যের কারণে চাহিদামতো টিকা পাচ্ছে না বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যার নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত দেশগুলো। তাদের জন্য টিকা রয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পিস ফোরাম স্প্রিংয়ের বৈঠকে ‘এবার টিকা বৈষম্যের মুখোমুখি বিশ্ব’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে এবার বৈশ্বিক টিকা ব্যবস্থাপনার এই ‘বিশাল ব্যবধান’কে সামনে আনা হলো।

সংস্থাটির প্রধানের দেয়া পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত ১২৪টি দেশে ৬ দশমিক ৩ কোটি ডোজ টিকা পৌঁছেছে। যা সব মিলিয়ে দেশগুলোর জনসংখ্যার মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ!

টিকা বণ্টন ঠিকমতো না হওয়ায় এমন ঘাটতি তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, বিশ্বের কোটি কোটি স্বাস্থ্যকর্মী, বৃদ্ধ মানুষ ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণরা টিকা পায়নি এখনো। অথচ উচ্চবিত্ত দেশ তাদের শিশু ও নাবালকদেরও টিকা দিচ্ছে।

গেলো বছর শুরু হওয়া করোনা মহামারিতে সংক্রমণের পর মৃত্যুর দীর্ঘ মিছিল এখনো দেখে চলেছে বিশ্ববাসী। সাম্প্রতিক ইতিহাসে দেশে দেশে মৃত্যুর এমন ভয়াবহ চিত্র দেখেনি মানব জাতি। এখানেই শেষ নয়, দ্বিতীয় বছরে মৃত্যু আরো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

গত ১৪ মে এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে সংস্থাটির প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, প্রথম বছরের চেয়ে দ্বিতীয় বছরে করোনা আরো অনেক বেশি প্রাণঘাতী হতে চলেছে।

করোনাকালে আগামী জুলাইয়ে জাপানে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিক আসর নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বেগের কথা জানানো হয় এদিন। এ সময় বলা হয়, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নতুন করে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরনকে (বি.১.৬১৭) ‘উদ্বেগজনক’ আখ্যায়িত করা হয়েছে চলতি সপ্তাহে। দেশটিতে এই ধরনটির প্রথম সন্ধান পাওয়া যায় গত বছরের অক্টোবরে।

ভারতে দ্রুত ও ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনার ধরনটি এরইমধ্যে বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএউচও। অন্যান্য দেশে পাওয়া ধরনগুলোর তুলনায় এটি অনেক বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

এমন পরিস্থিতিতে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে করোনার টিকাদানই একমাত্র উপায়। ভারতকে তাদের টিকাদান কর্মসূচি আরো জোরদার করা উচিত।