প্রবল উন্মাদনা আর পাহাড়সম উদ্বেগ নিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে ফুটবলের সবচেয়ে প্রাচীন টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা। একদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের ছোঁবলের আশঙ্কা অন্যদিকে ফুটবল উত্তেজনা। আছে সমালোচনাও। সবকিছুকে পেছনে ফেলে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার। প্রতীক্ষার প্রহর শেষে ১০ দলের ল্যাটিন আমেরিকান যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। এই যুদ্ধ স্টেডিয়ামে এসে দেখার সুযোগ নেই দর্শকদের।

copa america 2021 2

বরাবরের মতো এবারো টুর্নামেন্টে হট ফেভারিট পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। যেখানে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে উদ্বোধনী দিনেই মাঠে নামছে সেলেকাওরা। বাংলাদেশ সময় আজ রাত তিনটায় (১৪ জুন) ভেনিজুয়েলার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু করবেন নেইমার-সিলভারা। টুর্নামেন্টের স্বাগতিক নয়বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। দেশটির চার শহরের পাঁচটি ভেন্যুতে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় মাসব্যাপী এই প্রতিযোগিতার পর্দা উঠবে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে। আগামী ১০ জুলাই শেষ বাঁশি বাজবে বিখ্যাত মারাকানা স্টেডিয়ামে।

এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ছিল গত বছর। কিন্তু করেনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তা পিছিয়ে যায় এক বছর। ১০৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যৌথভাবে দুই দেশের প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু ঘটনা পরম্পরায় পাল্টে যায় স্বাগতিক স্বত্ব। সরকারবিরোধী আন্দোলন চলায় গত ২০ মে কলম্বিয়া হারায় টুর্নামেন্ট আয়োজনের অধিকার। আর আর্জেন্টিনায় করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় তারাও বঞ্চিত হয় স্বাগতিকের অধিকার থেকে।

সম্প্রতি ৪৭তম আসরটির আয়োজক হিসেবে ব্রাজিলের নাম ঘোষণা করে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা কনমেবল। এখানে করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর। আক্রান্তের দিক থেকে দক্ষিণ আমেরিকার শীর্ষে ও বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ব্রাজিল। এ কারণে দেশটির দুই তৃতীয়াংশ মানুষ টুর্নামেন্ট আয়োজনে ঘোর বিরোধিতা করে। একটা পর্যায়ে ব্রাজিলের খেলোয়াড়রাও দ্বিমত পোষণ করেন। টুর্নামেন্ট আদালত অবধি গড়ায়। শেষাবধি আদালতের নির্দেশে ব্রাজিলের স্বাগতিকত্ব নিশ্চিত হয়।

তাতে কিঞ্চিত পরিমাণ হলেও শিরোপা স্বপ্নে হোঁচট খায় আর্জেন্টিনা। খাওয়ারই কথা। নিজ দেশের টুর্নামেন্ট যখন অন্য দেশে গিয়ে খেলতে হয় তখন শিরোপা জয়ের কাজটা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে ওঠে। তা ছাড়া আলবিসেলেস্তেরা প্রায় তিন দশক ধরে ট্রফি জিততে পারছে না। গত তিন আসরের দুটিতে ফাইনালে চিলির কাছে টাইব্রেকারে হেরে যাওয়া দলটা গত আসরে হয়েছে তৃতীয়। এবার ২৮ বছরের অপেক্ষা ঘোচাতে মরিয়া দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

টুর্নামেন্টে ১০ দল দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে খেলবে গ্রুপপর্বের ম্যাচ। ‘এ’ গ্রুপে আছে আর্জেন্টিনা, চিলি, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও বলিভিয়া। ব্রাজিল, পেরু, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর ও পেরুর সমণ্বয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘বি’ গ্রুপ। টুর্নামেন্টে অতিথি দল হিসেবে খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া ও ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতারের। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয় দল দুটো।

শুধু শক্তিমত্তা নয়, আরো একটি বিশেষ কারণে টুর্নামেন্টে ফেভারিট ব্রাজিল। ঘরের মাঠে আসর আয়োজন করলে সেলেকাও চ্যাম্পিয়ন হবে এটা একরকম নিয়ম হয়ে উঠছে। পাঁচবার টুর্নামেন্ট আয়োজন করে প্রতিবারই শিরোপা জিতেছে ব্রাজিল। সবশেষ আসরও ব্রাজিলে হয়েছিল। যেখানে পেরুকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ট্রফি জেতে সেলেকাওরা। তাতে আর্জেন্টিনার হতাশা বেড়ে হয় কয়েকগুণ। লিওনেল মেসির হতাশাটা একটু বেশিই। তিনটি ফাইনাল হেরেছেন তিনি।

গত ১৫ বছরের বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারের দায় মেটাতে পারেনি এই টুর্নামেন্ট। তবে গতবারের তুলনায় এবারের আর্জেন্টিনা আরো পরিণত। আক্রমণভাগে যুক্ত হয়েছে ইন্টার মিলানকে চ্যাম্পিয়ন করানো তুখোর ফর্মে থাকা স্ট্রাইকার লাওতারো মার্টিনেজ। সঙ্গে সার্জিও অ্যাগুয়েরো, অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, পাওলো দিবালার মতো অভিজ্ঞরা তো আছেনই। তাদের নেতৃত্বে থাকছেন মেসি। জাতীয় দলের হয়ে একটা ট্রফি জয়ের জন্য তীর্থের কাক হয়ে আছেন তিনি।

কোপা আমেরিকায় সাফল্যের বিচারে আর্জেন্টিনার অবস্থান দ্বিতীয়তে। ১৪ বার ট্রফি জিতেছে তারা। সবচেয়ে সফল উরুগুয়ে জিতেছে একবার বেশি। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সবশেষ মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তুলেছে ২০১১ সালে। এরপর শিরোপা জয় তো দূরের কথা, আর ফাইনালেই উঠতে পারেনি উরুগুয়েনরা। এবার এক দশকের আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ এসেছে তাদের। দলটিতে আছেন ক্লাব মৌসুমে দুর্দান্ত সময় পার করে আসা খেলোয়াড়রা।

উরুগুয়েনদের স্বপ্নদ্রষ্টা লুইস সুয়ারেজ। তার দারুণ পারফরম্যান্সের ওপর দাঁড়িয়ে স্প্যানিশ লা লিগা জিতেছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। আক্রমণভাগে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে প্রস্তুত আছেন ফর্মে থাকা অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি। ফেভারিটের তালিকায় আরো একটা দল আছে। তাদের নাম চিলি। গত তিন আসরে দুবার ট্রফি জিতেছেন ভিদাল-সানচেজ-ব্রাভোরা। তাদের সোনালি দিন এখন ক্ষয়িষ্ণু। আরেকটা ট্রফি জয়ে এটাই তাদের শেষ সুযোগ।

বিশ্ব ফুটবলে ল্যাটিন আমেরিকানদের রাজ ছিল বহুকাল। কিন্তু সাম্প্রতিক বিশ্বকাপগুলোতে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। বিশ্ব ফুটবলের ঝান্ডা থাকছে ইউরোপে। কেবল বদল হচ্ছে হাত। ইতালি, স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্স জিতেছে সবশেষ চারটি সোনালি ট্রফি। চার আসর পেরিয়ে গেলেও ট্রফি জিততে পারেনি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের কোনো দেশ। এমনটা কখনো হয়নি। ২০০২ সালে সবশেষ ল্যাটিনদের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল।

এর আগে প্রতি দুই আসরে অন্তত একবার ট্রফি জিতেছে দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিনিধিরা। আগামী বিশ্বকাপে সেই ধারা ফিরিয়ে আনতে মরিয়া তারা। সেলক্ষ্যে এবারের কোপা আমেরিকাকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে দেখছে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ের মতো জায়ান্টরা।

Stay on top of the latest sports news, including cricket and football, from around the world. Get comprehensive coverage of matches, tournaments, and leagues— along with expert analysis and commentary from our team of sports journalists. Whether you're a die-hard fan or a casual observer, you'll find everything you need to know about your favorite sports here.

Sports, cricket, and football are popular topics in the world of sports. Cricket is a bat-and-ball game played between two teams of eleven players and is particularly popular in South Asian countries. Football, also known as soccer, is a team sport played with a spherical ball between two teams of eleven players and is widely popular worldwide. Sports enthusiasts follow the latest news, matches, tournaments, and leagues in these sports and analyze and comment on the performances of players and teams.