ঈদে ছুটি ৫ দিন, বিধিনিষেধে ছাড় নাকি ঘরবন্দী

দেশের অনেক এলাকা এই মুহূর্তে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারিতে বিপর্যস্ত। সংক্রমণের ভয়াল রূপ নিয়ন্ত্রণে গত ১ জুলাই থেকে আরোপ করা হয়েছে ‘কঠোর লকডাউন’। আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাতে তা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যেই আজ সোমবার চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে।

ঈদুল আজহার নামাজের পর কোলাকুলি, ফাইল ছবি

এদিকে, দেশে যখন করোনাভাইরাসের এই বাড়-বাড়ন্ত তখন ক্রমেই নিকটবর্তী হচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২০ অথবা ২১ জুলাই ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। এ অবস্থায় চলমান লকডাউন ১৪ জুলাইয়ের পর আরো বাড়বে নাকি বাড়বে না কিংবা ঈদের ছুটিই বা কীভাবে পালিত হবে- তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ ঈদুল ফিতরের মতো শহরের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ ঈদুল আজহা গ্রামে গিয়ে উদযাপন করেন।

জানা যায়, জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ঈদের তারিখ নির্ধারণে আগামী ১১ জুলাই সভা করবে। তবে সরকারি ছুটির যে তালিকা বছরের শুরুতে দেওয়া হয়, তাতে ২১ জুলাই ঈদুল আজহা ধরে ২০ থেকে ২২ জুলাই অর্থাৎ মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার- এই তিন দিন ছুটি ধরা আছে। সেই হিসাবে এবার ঈদে সরকারি ছুটি থাকবে ৫ দিন। কারণ ঈদের তিন দিনের ছুটির পরের দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। এই ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।

লকডাউনে বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন

ঈদের সময় চলমান লকডাউন অব্যাহত থাকছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলছেন, সবকিছুই নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর। তার মতে, এই বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে মানুষকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতেই। সুতরাং মানুষ যদি এই বিধিনিষেধ যথাযথভাবে মেনে চলে, তাহলে সামনে এর একটা সুফল পাওয়া যাবে। এ কারণে আমাদের সবারই উচিত হবে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলা।

অন্যদিকে, সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত যদি কঠোর বিধিনিষেধ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে সংক্রমণের হার খানিকটা কমে আসতে পারে। আর সেটা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু শর্ত শিথিল করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল নিয়ে খুলতে পারে অফিস-আদালত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে বিভিন্ন শর্ত ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালুর পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তও আসতে পারে। তবে এই অবস্থা আবার বেশি দিন স্থায়ী হবে না। বরং এক সপ্তাহ বা দিন দশেক এই শিথিলতা রাখার পর আবারো কঠোর বিধিনিষেধে ফিরতে পারে দেশ।

ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি, ফাইল ছবি

উল্লেখ্য, এর আগে গত ঈদুল ফিতরের সময় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ৩০ রোজা ধরে সরকারি ছুটি ছিল তিন দিন। যদিও অন্যান্য সময় ২৯ রোজা ধরে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এর ফলে গেল ঈদুল ফিতরে সাপ্তাহিক মিলে ৪ দিন ছুটি পড়েছিল। তবে ঈদে কর্মস্থল ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। তখনকার চেয়ে বর্তমান পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। তাই আগামী ঈদুল আজহায় সরকারি সিদ্ধান্ত জানতে আরো কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।