আপনি পড়ছেন

এক সন্তান নীতির কারণে চীনা মা-বাবারা দ্বিমুখী মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন। একদিকে আর্থিক এবং অন্যদিকে আবেগ-অনুভূতির ক্ষেত্রে বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছেন তারা। সম্প্রতি এমন বাবা-মায়ের দুঃখ নিয়ে পরিচালিত গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়, একমাত্র সন্তানের মৃত্যু মা-বাবার ব্যাপক হতাশার কারণ। তাছাড়া আর্থিক ক্ষতি তো আছেই।

china flag

১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চীন সরকার দম্পতিদের জন্য এক সন্তান নীতি বেধে দেয়। তাতে করে সন্তানটি মারা গেলেই বাবা-মা পড়তেন অথৈ সাগরে। একমাত্র সন্তান হারানো এমন ১০০ মা-বাবার ওপর ওই গবেষণা চালানো হয়। যারা অসুস্থতা, দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা বা খুনের কারণে তাদের সন্তান হারিয়েছেন। একমাত্র সন্তান যখন মারা যায়, তখন সেসব মা-বাবার পুনরায় সন্তান জন্মদানে সামর্থ্য রাখেন না।

সন্তান হারানো এসব মা-বাবার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন লিহং শি। তিনি বলেন, ‘বয়স্কদের সুরক্ষার প্রধান মাধ্যম তাদের সন্তান। তাই একমাত্র সন্তান মারা গেলে বৃদ্ধ বয়সে তারা শোকাহত, একা এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়েন।’

২০১৭ সালে ৬০ বছর বয়সী এক মা বলেন, ‘আমরা আরও সন্তান নিতে চেয়েছিলাম। আমার বাবা-মায়ের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন ছিল যে, আমাদের কেবল একটি সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।’

সিএনএ’র রিপোর্টে বলা হয়, এক সন্তান নীতি বাস্তবায়নে গর্ভনিরোধ এবং তাতেও কাজ না হলে গর্ভপাতসহ কঠোর সব পদক্ষেপ নিয়েছিল চীন সরকার। যদি কেউ এই নিয়ম ভাঙত তাহলে তাকে আর্থিক জরিমানা করা হতো। এ ছাড়া সরকারি অনুমিত ছাড়া সন্তান নিলে প্রায়ই নাগরিকের মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হতো না। এছাড়া চাকরি হারানোরও ঝুঁকি ছিল।

সন্তানহারা এক মা বলেন, ‘একটি সন্তান নিয়ে পরিবারগুলো টাঙানো দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটছে। যেকোনো মুহূর্তে পরিবারটি দড়ির ওপর থেকে পড়ে যেতে পারে। আমরাও দুর্ভাগাদের মধ্যে একজন।’

সাক্ষাৎকার দেওয়া অনেকে বিভিন্ন অঞ্চলে নার্সিং হোমের অতিরিক্ত ব্যয় ও কম সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চিন্তিত। চীনের বৃদ্ধাশ্রম বা বয়স্কদের পরিচর্যায় নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বৃদ্ধ জনগণের চাহিদা পূরণ করতে পারে না এবং এসব সুযোগ সুবিধা বিমার আওতায় নয়। সিএনএ জানিয়েছে, চীনের এক সন্তান নীতি এখন ইতিহাস কিন্তু এর বৈধতা নির্ভর করবে সরকার শোকাহত মা-বাবাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছে।

দরিদ্রতা ও অধিক জনসংখ্যা কমাতে ৪০ বছর ধরে একসন্তান নীতির কারণে চীনে জন্মহার খুব দ্রুত কমে যায়। ২০১৫ সালে জন্মহার বাড়াতে চীন সরকার দুই সন্তান নীতি চালু করে। ২০২১ সালের মে মাসে চীন সরকার জানায়, পরিবারগুলো এখন থেকে তিনটি সন্তান নিতে পারবে।

এক সন্তান নীতির কারণে জন্মহার সফলভাবে কমানোর সঙ্গে সঙ্গে চীন উন্নত হয়েছে। কিন্তু দেশটির কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এই ভেবে যে, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে শক্তিশালী রাখার মতো পর্যাপ্ত তরুণ কর্মী থাকবে না। বেশি বয়সী কর্মীরা তাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ পেনশনগুলো আশা করে এবং কেবল সেই চাপগুলোই বাড়িয়ে তুলছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.