যে কোনো সময় ইরানে ইসরায়েলি হামলা!

আরব সাগরের ওমান জলসীমায় ইসরায়েলের তেল ট্যাঙ্কারে হামলার পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেই চলেছে দেশটি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্তজ ইরানকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল যে কোনো সময় বিমান হামলার জন্য প্রস্তুত।

ইসরায়েলের সমর্থক দেশগুলো জাতিসংঘে ওই হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করার পর দেশটি থেকে এ হুমকি এল। তেল ট্যাঙ্কারটি ছিল ইসরায়েলের একটি কোম্পানির, দেশটির একজন বিলিয়নিয়ারের মালিকানাধীন। ট্যাঙ্কারটিতে হামলা হয় ২৯ জুলাই। ডেইলি সাবাহ, প্রেস টিভি।

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই হামলার দায় চাপিয়েছে ইরানের ওপর। তবে তাদের এই দাবি কোনো দেশ সমর্থন করেনি। আর হামলার অভিযোগ ইরান বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। ইসরায়েলের পক্ষের দেশগুলোর দাবি, ইরান এর আগেও আঞ্চলিক মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে মিলে এ ধরনের হামলা চালিয়েছিল।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা ইরানের যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলার বিষয়ে একমত হয়েছি। বিশ্ব এখন চায় আমরা ইরানের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিই। তবে গান্তজের মন্তবব্যের জবাবে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য দেয়নি ইরান।

এদিকে বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলে অভিযোগ তোলা হয়েছে, গত ৭০ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তি ও অস্থিতিশীলতা তৈরির পেছনে ইরানের হাত রয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে নৌপথে বাণিজ্যিক ও বেসামরিক জাহাজে হামলার লম্বা কালো অধ্যায় রয়েছে।

গত দুই বছরের কম সময়ে এ অঞ্চলে অন্তত ১০টি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা হয়েছে। এসব জাহাজ হয় তেল বহন করছিল, না হয় খাদ্যসামগ্রী।

এর আগে ওমান জলসীমায় ইসরায়েলি তেল ট্যাঙ্কারে হামলায় বিট্রিশ নাবিক নিহত হওয়ার ঘটনায় ইরান-ব্রিটেন পাল্টাপাল্টি দূত তলব করে। ২ আগস্ট সকালে ব্রিটেনে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহসেন বাহারবন্দকে তলব করা হয়।

একইদিন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তেহরানে নিযুক্ত ব্রিটেনের চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে। ২৯ জুলাই ওই তেল ট্যাঙ্কারে হামলায় এক ব্রিটিশ ও এক রোমানিয়ার নাবিক নিহত হয়। হামলার পরই ইসরায়েল, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দোষারোপ করে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ারও ঘোষণা দেন। তবে ইরান বরাবরই অভিযোগটি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

ইরান কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্রিটেন শুধু এবারই এমন মিথ্যা অভিযোগ করেনি, আগেও এ ধরনের জঘন্য অভিযোগ তারা করেছিল। ইরান প্রমাণ চাইলে তারা তা দিতে পারেনি। পারস্য উপসাগরে অস্থিতিশীলতার জন্য ইরান দায়ী নয়।

ইরান শুধু নিজেকে রক্ষা করে। ‘গায়ে পড়ে আমরা হামলা করি না। আমরা চাই পারস্য উপসাগরে জাহাজ চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক। আমরা এই জলপথের নিরাপত্তা আরও বাড়াতে তৎপর।’

আক্রান্ত হওয়ার সময় জাহাজটি উত্তর ভারত মহাসাগরে অবস্থান করছিল। জাহাজটিতে কোনো কার্গো ছিল না। গন্তব্য ছিল তানজানিয়ার দারুস সালাম থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফুজায়রাহ শহর।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভির মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস এক বিবৃতিতে জানায়, ওমান উপকূলের ১৫২ নটিক্যাল মাইল বা ২৮০ কিলোমিটার দূরত্বে একটি জাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। এটা জলদস্যু সংক্রান্ত কোনো হামলা ছিল না।