জালালাবাদের পতন, কাবুল বিচ্ছিন্ন

আফগানিস্তানে সরকার নিয়ন্ত্রিত বড় অঞ্চল শুধু কাবুলই এখন বিদ্যমান। তাও মূলত চারপাশ ঘেরাও করে রেখেছে তালেবান। অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে কাবুলের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় কাবুলে ঢুকে পড়বে তালেবান।

এরই মধ্যে রোববার সকালে তালেবান যুদ্ধ ছাড়াই নানগরহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদ শহর দখল করে নিয়েছে। উত্তরের বৃহৎ শহর বালখ প্রদেশের রাজধানী মাজার ই শরিফ দখলের পরই জালালাবাদের পতন ঘটল। এনিয়ে ৩৪টির মধ্যে ২৩টি প্রাদেশিক রাজধানী দখলে এল তালোনের। 

জালালাবাদের বাসিন্দা আহমদ ওয়ালি বলছেন, আমরা ঘুম থেকে উঠে দেখি পুরো শহরে তালেবানের সাদা পতাকা উড়ছে। শহরটি তালেবান যুদ্ধ ছাড়াই দখলে নিয়েছে।

নানগরহারের এমপি আবরারুল্লাহ মুরাদ এপিকে বলছেন, মূলত প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ার পরই জালালাবাদ তালেবানের দখলে চলে যায়।

একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, জালালাবাদের গভর্নর তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। বিনিময়ে তালেবানের কাছে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষার আবেদন করা হয়। পশ্চিমা একটি সূত্রও জালালাবাদ পতনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এমনকি তালেবান আফগান-পাকিস্তান সংযোগ সড়ক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

তালেবানের দখল অভিযান এক প্রকার বাতাসের বেগে চলছে। সপ্তাহের মধ্যেই প্রায় পুরো দেশ দখলে নিয়েছে তারা। শনিবার তারাল মাজার ই শরিফ নিয়ন্ত্রণে নেয় কোনো প্রকার প্রতিরোধ ছাড়াই।

প্রদেশটির এক কর্মকর্তা জানান, মহাসড়ক ধরে সরকারি বাহিনীর বহু সদস্য উজবেকিস্তানে পালিয়ে গেছে। অসমর্থিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে আফগান শহর হায়রাতান ও উজবেকিস্তানের মাঝখানে আয়রন ব্রিজ পার হচ্ছে আফগান আর্মির গাড়ি ও সদস্যরা।

সরকারের প্রভাবশালী কর্মকর্তা আতা মোহাম্মদ নূর ও আবদুল রশিদ দোস্তাম পালিয়ে গেছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। কর্মকর্তা নূর সোস্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে কিছু সরকারি কর্মকর্তার যোগসাজসের ফলে তালেবান বালখ প্রদেশ দখল নিয়ে নিয়েছে।

কাবুল থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক চার্লোত বেলিস জানাচ্ছেন, কাবুল ছাড়া সরকারের নিয়ন্ত্রণে আর কোনো বড় অঞ্চল নেই। তিনি বলেন, মাত্র নয়দিন আগেও তালেবানের দখলে একটা প্রাদেশিক রাজধানীও ছিল না। এখন অধিকাংশ প্রাদেশিক রাজধানী তাদের দখলে। এটা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।

রোববার এক বিৃবতিতে তালেবান জানিয়েছে, আফগান জনগণ তালেবানকে স্বাগত জানানোর কারণেই এত দ্রুত একের পর এক এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় সম্ভব হয়েছে। তালেবানের হাতে আফগান জনগণ ও বিদেশিরা নিরাপদ থাকবে বলেও বিবৃতিতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।