তালেবানের ক্ষমতায় হুমকিতে পড়তে পারে বিআরবি প্রকল্প
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নানা বিতর্কের মধ্যেই আফগানিস্তানে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসীন হতে যাচ্ছে তালেবান। শতধা বিভক্ত ও সংঘাতপূর্ণ দেশটিতে অনেক দেশেরই বিনিয়োগ রয়েছে। চীন তাদেরই মধ্যে অন্যতম। আফগানিস্তানে তাদের শত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরবি প্রকল্প অন্যতম।
আফগানিস্তানে চীনা প্রকল্পের কাজ পাহারা দিচ্ছেন এক আফগান নিরাপত্তাকর্মী
অভিযোগ রয়েছে, নিজেদের এই বিনিয়োগ এবং প্রকল্পের স্বার্থে আফগান জনগণের প্রত্যাশা কিংবা বিশ্ব সম্প্রদায়ের মতামত উপেক্ষা করে যেনতেন উপায়ে দেশটিতে স্থিতিশীলতা আনতে উদগ্রীব বেইজিং। চীনের এমন পদক্ষেপ দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি এবং তাদের বিনিয়োগকেও হুমকির মুখে ফেলবে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
তালেবান কর্তৃক আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের ঘটনায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশ নিন্দা জানালেও একে স্বাগত জানিয়েছে চীন। কোনো সময় না নিয়েই তালেবানকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছে শি জিনপিং সরকার। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সৈন্যরা আফগানিস্তান ত্যাগ করলে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করতে চায় চীন।
কিন্তু চীন এটা বিবেচনায় নিচ্ছে না যে, গত দুই দশকে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি দেশটিতে করা বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগের নিরাপত্তা দিয়েছে। যেখানে চীনের বিনিয়োগও সমানভাবে নিরাপত্তা পেয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে ন্যাটোর সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে দেশটিতে থাকা চীনের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগকৃত বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার হুমকির মুখে পড়বে।
আর সবচেয়ে বড় হুমকিতে পড়বে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতীক বিআরআই প্রকল্প। যে প্রকল্পের আওতায় চীন ইতোমধ্যে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকায় অন্তত ২৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। আর তালেবানের মতো চরমপন্থী গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসলে এই প্রকল্পের জন্য তা হবে অনিশ্চয়তার নামান্তর। চীনের জন্যও তা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ রয়েছে পাকিস্তানে। দেশটির সঙ্গে চীনের সুসম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি তাতে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে চীনের একটি শাটল ট্রেনে বোমা হামলায় ৯ চীনা নাগরিকের মৃত্যু তার কারণ। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলার পেছনে আফগান তালেবানদের হাত রয়েছে। সুতরাং এটা অনুমেয় যে, সেই তালেবান যদি আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে, তাহলে অঞ্চলটিতে কী ঘটতে পারে? চীনের বৃহৎ সেই প্রকল্পের ভবিষ্যতই বা কি হতে পারে!
কিন্তু তবুও চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তালেবানের মতো টেকসই নয়, এমন একটি ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’কে নির্দ্বিধায় সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের নীতি-নির্ধারণী নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন উঠছে- তারা কি ইচ্ছাকৃতভাবেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, নাকি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোনো প্রভাবকের প্রভাবে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। সে ক্ষেত্রে উইঘুর এবং জিনজিয়াং নিয়ে তালেবানের সঙ্গে চীনের আলোচনার ঘটনা কি প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে? প্রশ্ন রাখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের বহুল আকাঙ্ক্ষিত প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বাস্তবায়নে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। আর তালেবানের মতো অস্থায়ী এবং চরমপন্থী একটি গোষ্ঠী আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকলে দেশটিতে কখনোই স্থিতিশীলতা আসবে না। ফলে, হুমকির মুখে পড়বে বৃহৎ এই প্রকল্পসহ আফগানিস্তানে থাকা চীনের অন্যান্য প্রকল্পে করা বৃহৎ বিনিয়োগ। আর তাই আফগানিস্তান প্রশ্ন বেইজিংকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা তালেবানকে সমর্থন দিয়ে নিজদের বিপদ ডেকে আনবে নাকি আফগান জনগণের স্বার্থ রক্ষায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে তালেবানকে মোকাবেলায় কাজ করবে। অন্যথায় দুই-ই হারাতে হতে পারে বেইজিংকে। সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.